ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

হরিণাকুন্ডুতে ক্লিনিকে সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু

  ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২০, ১৭:৪৭  
আপডেট :
 ১৫ আগস্ট ২০২০, ১৮:২৩

হরিণাকুন্ডুতে ক্লিনিকে সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু

মহেশপুরের পর এবার হরিণাকুন্ডু শহরের ভাই ভাই ক্লিনিকে রোজিনা খাতুন (২০) নামে এক প্রসূতি সিজারের পর মৃত্যুবরণ করেছে। তবে তার যমজ দুই সন্তান বেঁচে আছে। অভিযোগ উঠেছে, ঘটনা ধামাচাপা দিতে করোনা উপসর্গ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে ডাক্তার জামিনুর রশিদ ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

মৃত গৃহবধূ রোজিনা খাতুন হরিণাকুন্ডু উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের শিলনের স্ত্রী।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রোজিনা খাতুন জ্বর নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের শামিমা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জটিলতা থাকায় ডা. শামিমা অপারেশনের ঝুঁকি না নিয়ে রোগী ফিরিয়ে দেন। এরপর রোজিনা ভর্তি হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। স্বজনরা বৃহস্পতিবার রাতে হরিণাকুন্ডু হাসপাতাল মোড়ের ভাই ভাই ক্লিনিকে ভর্তি করেন। শুক্রবার সকালে ওই ক্লিনিকে ভর্তির পর ডা. জামিনুুর রশিদ ও ডা. আহসান হাবিব অপারেশন করেন রোজিনাকে।

অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে পেট ফুলে গিয়ে রোজিনার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী শিলন মিয়া।

তবে ডা. জামিনুুর রশিদ জানান, রোজিনার করোনার উপসর্গ ছিল। ছিল প্রচণ্ড জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গলাব্যথা। অন্যদিকে তার ডেলিভারির সময়ও হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তাকে অপারেশন করে দুর্ঘটনা ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, হরিণাকুন্ডু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকল যন্ত্রপাতি থাকলেও সেখানে অপারেশন করা হয় না। সরকারি হাসপাতালের ডা. জামিনুর রশিদ দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে একই কর্মস্থলে থেকে ক্লিনিকগুলোতে অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার বদলির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডুসহ বিভিন্ন উপজেলা ও হাটে বাজারে গজিয়ে ওঠা ক্লিনিকগুলোতে সেবার কোন মান নেই। অহরহ সেখানে অপচিকিৎসায় মানুষ মারা গেলেও সিভিল সার্জন অফিস কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। তারা লোক দেখানো তদন্ত করেই দায়িত্ব শেষ করেন।

এলাকাবাসী জানায়, হরিণাকুন্ডুর ভাই ভাইসহ ৬টি ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন নেই। নেই সাইনবোর্ড। নেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ডাক্তার, ডিপ্লোমা নার্স, প্যাথলজি টেকনিশিয়ান। নেই চিকিৎসার নুন্যতম কোন পরিবেশ। ক্লিনিকগুলোতে সর্বক্ষণ কোন চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স নেই। তারপরও ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন দপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অর্থের বিনিময়ে এদের নতুন লাইসেন্স ও পুরানো লাইসেন্স নবায়ন করে থাকে।

অভিযোগ উঠেছে সিভিল সার্জন অফিসের নওশের আলী, নজরুল ইসলাম, ইসরাইল হোসেন ও নজরুল ইসলাম (২) ক্লিনিকের এই ফাইলগুলো দেখভাল করেন। তারাই মিথ্যা তথ্য দিয়ে বছরের পর বছর মানহীন এসব ক্লিনিক বহাল রাখার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, আমরা মাতৃমৃত্যু কোনভাবেই সহ্য করবো না। হরিণাকুন্ডু ভাই ভাই ক্লিনিকে প্রসুতি মৃত্যুর ব্যাপারে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

তিনি বলেন, আগামী ২৩ আগস্ট পর্যন্ত এসব ক্লিনিকের শেষ সময় দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তারা শর্ত পূরণ করতে না পারলে সবগুলো বন্ধ করে দেব।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত