ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

চট্টগ্রামে ডোরাকাটা শিশুর জন্ম

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২০, ১৯:০১  
আপডেট :
 ২৩ নভেম্বর ২০২০, ১৯:০৪

চট্টগ্রামে ডোরাকাটা শিশুর জন্ম
ছবি: চট্টগ্রামের ডোরাকাটা শিশু

শরীরে ডোরাকাটা দাগসহ বিরল এক শিশুর জন্ম হয়েছে চট্টগ্রামে। যার শরীরের চামড়া দেখতে প্লাস্টিকের মত, ত্বকে বাদামি আবরণ, চোখ ও ঠোঁট লাল টুকটুকে, বড় ঠোঁট ও বড় নাভি। জন্মগত বিরল এই চর্মরোগের নাম হারলিকুইন ইকথাইয়োসিস। এ ধরনের নবজাতককে বলা হয় কলোডিয়ান বেবি।

শনিবার রাতে নগরীর নাজিরপোলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই শিশুর জন্ম হয়।

নগরীর দেওয়ানহাট এলাকার বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী এক গৃহবধূ নবজাতকটির মা। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়েছে। অস্ত্রোপচার করেছেন প্রসূতিবিদ্যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইশরাত জাহান।

জন্মের পরপরই শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক শিশু সাধারণত ৪০ সপ্তাহে জন্ম নিলেও ৩৮ সপ্তাহে জন্ম নিয়েছে শিশুটি। এটি ওই গৃহবধূর প্রথম সন্তান।

শিশুটি ‘কলোডিয়ান বেবি’ বলে জানান চমেক হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী।

শিশুটিকে দেখে এসে প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, ‘হারলিকুইন ইকথাইয়োসিস নামে এক ধরনের জন্মগত চর্মরোগ আছে, যেগুলো জিনগত ত্রুটির কারণে হয়। সাধারণত কয়েক লাখ নবজাতকের মধ্যে একজন এ ধরনের রোগে আক্রান্ত অবস্থায় জন্ম নেয়।’

‘বাবা অথবা মায়ের বংশগত কোনো ত্রুটি থেকে নবজাতক এ রোগে আক্রান্ত থাকে। এ ধরনের শিশুর চেহারাটা অদ্ভুত হয়। চোখ এবং ঠোঁট রক্তবর্ণ হয়। ত্বকের সমস্যা থাকে। ত্বক খসে পড়ে না। চামড়াগুলো মোটা ও পুরু হয়, খসখসে থাকে। একটি শিশুকে পুরু প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে যে অবস্থা হয়, সাধারণ কলোডিয়ান বেবি সেরকমই হয়।’

এর আগেও চমেক হাসপাতালে এমন শিশুর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানান নবজাতক ওয়ার্ডের প্রধান অধ্যাপক জগদীশ দাশ। তিনি বলেন, ‘নবজাতকটির শরীরের ত্রুটি মারাত্মক। একই ধরনের ত্রুটি নিয়ে এর আগেও নবজাতককে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ধরনের শিশুর চর্মরোগের সমস্যা ছাড়াও হাত-পায়ের পেশি দুর্বল হয়। তাই হাত-পা কম নাড়াতে পারে। ভর্তি হওয়া নবজাতকেরও একই সমস্যা আছে।’

তিনি আরো জানান, ‘কলোডিয়ান বেবিদের ত্বক ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ জটিলতা থাকে। পানিশূন্যতাও থাকে। মুখ খুলতে পারে না। এজন্য স্বাভাবিকভাবে তারা খাবারও গ্রহণ করতে পারে না। জন্মের পর মাত্র ১৫ শতাংশ কলোডিয়ান বেবি বেঁচে থাকে। যদি শরীরে জটিলতা মারাত্মক আকারের হয়, তাহলে এ ধরনের শিশু জন্মের প্রথম সপ্তাহেই মারা যায়।’

ওই দম্পতির দ্বিতীয় সন্তানও একই জিনগত ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেবে কিনা তা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রসবের আগেই নিরূপণ সম্ভব বলে জানিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত