ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রকল্পের ব্যয় ও সময় নিয়ে সংসদীয় কমিটির অসন্তোষ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৩০

প্রকল্পের ব্যয় ও সময় নিয়ে সংসদীয় কমিটির অসন্তোষ
ছবি: সংগৃহীত

রেলের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাক্কলন ও বাস্তবায়নে সময় এবং ব্যয়ের হিসাবের তারতম্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরের চলমান প্রকল্পের ওপরে আলোচনা এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়কে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির আগের বৈঠকের সুপারিশের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতির ওপর আলোচনা করা হয়।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে চলতি ও গত অর্থবছরের রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছাকাছি ঘুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্রাক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয় ২০১০ জুলাই মাসে। ২০১৬ সালের জুন মাসে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়িয়ে তা ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

প্রথমে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৮৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। পরে এটি সংশোধন করে বাড়ানো হয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ টাকা।

কার্যপত্র থেকে আরো জানা গেছে, খুলনা হতে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি ৩৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এই প্রকল্প অনুমোদন হয় ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। যা শেষ হওয়ার কথা ২০১৮ সালের ৩০ জুন। পরে এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ধরা হয়। আর সময় ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরকম আরও বেশকিছু প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করে সংসদীয় কমিটি।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রকল্পের যে প্রাক্কলন করা হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়নের সময় ঠিক থাকে না। প্রাক্কলনে যে ব্যয় ধরা হয় দরপত্রে সেটার চেয়ে কম বা বেশি দেখা যায়। এটা হওয়া উচিত নয়। তাছাড়া প্রকল্প শুরু হয় মেয়াদ শুরুর অনেক পরে। দেখা যায়, ২০১০ সালের প্রকল্প শুরুই হয়েছে ২০১৮ সালে। এর ফলে প্রকল্পের খরচ অনেক বেড়ে যায়। জনস্বার্থ বিঘ্নিত হয়। এ জন্য আমরা বলেছি, প্রাক্কলনের চেয়ে বেশি খরচ করা যাবে না। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।’

তিনি জানান, সংসদীয় কমিটি সরকারের বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ (আইএমইডি) বিভাগের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ বিষয়টি দেখার জন্য কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে।

এদিকে বৈঠকে ঢাকা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেললাইন তৈরির পরিকল্পনায় আন্ডার পাসগুলোতে ‘হাই কিউব কন্টেইনার’ পরিবহনের সুবিধা কেন রাখা হয়নি, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে কমিটিতে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

কমিটির সভাপতি এ বিষয়ে বলেন, ‘জুরাইন রেলওয়ে ওভারপাসের উচ্চতা কম হয়েছে। ওই ওভার পাসের যে উচ্চতা তাতে হাই-কিউব কন্টেইনারগুলো পরিবহন করা যাবে না। এতে পরিবহন ব্যয় বাড়বে। সমন্বয়হীনতার কারণে এরকম হয়েছে বলে আমাদের মনে হয়। এজন্য আমরা ওই বিষয়টি দেখতে বলেছি। আর ভবিষ্যতে যেসব ওভারপাস ও আন্ডারপাস নির্মাণ হবে, তার উচ্চতা বা গভীরতা ঠিক রাখতে বলেছি।’

বৈঠকে মন্ত্রণালয়কে ২০০৮ সাল হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত রেললাইন, সিট, সিগনাল ব্যবস্থা এবং প্ল্যাটফর্মসহ রেলওয়েতে যাত্রীসেবার উন্নয়নের একটি সার্বিক প্রতিবেদন কমিটিতে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

সংসদীয় কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন এবং খরচ হ্রাস করতে, একটি বড় প্রকল্পকে পৃথক করে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাটকে একটি প্রকল্প এবং উন্নয়ন কাজগুলোর জন্য আরেকটি প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

এছড়া সড়ক পথে রেল সিগনালের স্থানগুলোতে ওভারপাস তৈরি করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিকল্পনা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।

আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, এ বি তাজুল ইসলাম, ফজলে হোসেন বাদশা, আহসান আদেলুর রহমান, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এবং খাদিজাতুল আনোয়ার বৈঠকে অংশ নেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত