ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাজবাড়ীতে গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২১, ১৪:৪২  
আপডেট :
 ০৯ জুলাই ২০২১, ১৪:৫১

রাজবাড়ীতে গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

নাম বাহাদুর। সাদা ও কালো রংয়ের মিশেলে ফিজিয়ান জাতের বাহাদুর নামের এ গরুটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে ছয় ফুট এবং লম্বায় সাড়ে এগার ফুট। ওজন একত্রিশ মণ-বারোশ চল্লিশ কেজি। দাম নির্ধারণ করেছেন ১৪ লক টাকা। এ গরুটি গত সাড়ে তিন বছর ধরে লালন পালন করা হচ্ছে।

বাহাদুরের মত বিশ মণ থেকে শুরু করে ৩১ মণ পর্যন্ত ২২ টি বড় ধরনের গরু রয়েছে রয়েলে ইন্ডষ্ট্রিজ লিমিটেড নামে পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের এ গরুর খামারটিতে।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে লালন পালন ও মোটাতাজা করণ করে আসছেন এ খামারের গরু গুলো। খামারটিতে ১ শত ৩০ টি গরু রয়েছে।

লকডাউনে জেলা ও ঢাকার গরুর হাট গুলো এখনও বেচা কেনা শুরু না করায় গরু বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর কয়েক হাজার খামারি।

এদিকে গো খাদ্যের অত্যাধিক দামের কারণে প্রতিদিন গরু গুলো লালন পালনে খরচ হচ্ছে অতিরিক্ত। খামারটিতে ফিজিয়ানসহ শাহিওয়াল জাতের গরু গুলোর ওজন সবচেয়ে বেশি। প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে গরু গুলো মোটা তাজা করা হয়েছে রাজবাড়ীর খামার গুলোতে।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজবাড়ীর ৫ টি উপজেলায় সদর উপজেলার ,পাংশা, বালিয়াকান্দি,কালুখালী ও গোয়ালন্দ এ উপজেলা গুলোতে ছোট বড় সাড়ে আট হাজার খামারি রয়েছেন।

তারা প্রায় ৩৩ হাজারেরও বেশি গরু ও ছাগল মোটা তাজা করেছেন কোরবানির এই ঈদে বিক্রি করার উদ্দ্যেশে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে কঠোর বিধিনিষেধ চলমান থাকায় ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা থেকে কোন ব্যাবসায়ী আসতে পারছেন না।

রাজবাড়ীতেও গরুর হাট গুলো এখনও বসেনি। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতেও গরু গুলো পাঠাতে পারছেন। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও বড় এ গরু গুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই খামারে মালিকসহ জেলার অন্যান্য খামারিরা।

রয়েল ইন্ডষ্ট্রিজ লিমিটেড, এপিসোড এগ্রো ফার্ম , এবিসি এগ্রো ফার্ম সহ জেলার প্রায় সাড়ে ৮ হাজার ছোট বড় খামারি তাদের পালিত এসব গরু বিক্রি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। লাভের আশায় গরু গুলো মোটা তাজা করা হলেও করোনা মহামারি তাদের এসব গরু বিক্রিতে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

খামারিরা বলেন, ঈদের সময় ঘনিয়ে এলেও লকডাউনে তারা এখনও গরু বিক্রি করতে পারছেন না। বাইরে থেকেও কোন ব্যাবসায়ী এখনও আসছে না। খাবারের অত্যাধিক দাম হওয়ায় প্রতিদিন খরচ বেশি হচ্ছে। এতে গরু বিক্রি নিয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

রাজবাড়ী রয়েল ইন্ডষ্ট্রিজ লিমিটেড ম্যানেজার গোবিন্দ ভাদুরি বলেন, তাদের ফার্মে ১৩০ টি গরুর মধ্যে ২২ টি বড় ধরনের গরু রয়েছে। লকডাউনে বিভিন্ন জেলা থেকে কোন ব্যাবসায়ী আসতে পারছে না, জেলার হাট গুলো এখনও না বসানোর কারণে তারা লোকসানের আশঙ্কা করছেন। গরু বিক্রির ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

রাজবাড়ী জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. ফজলুল হক সরদার বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গত বছরের চাইতে এবছর ৫ হাজারেরও বেশি গরু ও ছাগল মোটা তাজা করেছেন। এবছর ৩৩ হাজারেরও বেশি গরু ও ছাগাল কোরবানির জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির এ সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলাতে গরু বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও ১৪ জুলাই এর পরে জেলার গরুরহাট গুলো বসানোর ব্যবস্থা করতে পারবেন বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত