ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

শোক দিবস উপলক্ষে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৫:৫২  
আপডেট :
 ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৭:৪৪

শোক দিবস উপলক্ষে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কেলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. এখলাছুর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বড় মাপের মানুষ ছিলেন। তাই তো ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, আমি হিমালয় দেখিনি, শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রোববার আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্য ভালো কোনো আইনজীবী ছিলো না। সিলেটবাসী চাঁদা তুলে লন্ডন থেকে ভালো আইনজীবী নিয়ে আসেন। তিনিই বঙ্গবন্ধুকে কারামুক্ত করেন। সিলেটের সুশীল সমাজের প্রধান ছিলেন আব্দুল করিম সাহেব। তাকে বঙ্গবন্ধু বললেন আমি সিলেটবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। আর আব্দুল করিম বললেন আমরা শুধু রক্তের ঋণ শোধ করলাম। আজ যে সিলেট বাংলাদেশের অংশ, তার পেছরে মূল অবদান রেখেছিলেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় শোক দিবসের সমাবেশ ও র‌্যালির আয়োজন করেন আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শোক র‌্যালিটি মেডিকেলের সামনে থেকে মিরপুর সড়ক প্রদক্ষিণ করে ধানমন্ডিতে মেডিকেল কলেজের এফ ব্লকে গিয়ে শেষ হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদদের জন্য দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এসময় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ। সোমবার শোক দিবসে পতাকা উত্তোলন করবে দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি এই মেডিকেল কলেজ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজের উপাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জাতির পিতাসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার পরিবারের প্রায় সবাইকে একযোগে হত্যা করা হয়েছিল। এই প্রজন্মের সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়া উচিত। এমনি বড় ছোট সবাইকেই বঙ্গবন্ধুকে জানা উচিত। বাংলাদেশ বিনির্মাণে তার যে অবদান, তা বলে শেষ করা যাবে না।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ওই দিনটি স্মরণ করে তিনি বলেন, আমরা তখন মেডিকেলের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তখন ভোর বেলা খবর পেলাম যে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। ওইদিনই আমরা বেরিয়ে গেলাম রাস্তায়। মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণেও দেখলাম সবার কী শোকের মাতম। সেদিন ভাগ্যক্রমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। পরে শেখ হাসিনা দেশের হাল না ধরলে আমরা আজ কোথায় থাকতাম তা কেউ জানে না। শোক দিবস সম্পর্কে আমরা জানবো, যথাযথ মর্যাদায় তা পালন করবো ও নিজ নিজ জীবনে তার প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করবো।

আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রফেসর ডা. এম আলমগীর চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে পরিবার-পরিজনসহ ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। যে কারণে এ দিনটি আমাদের শোকের দিন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণ আমাদের রক্তকে উদ্দীপ্ত করেছিল। সেই বজ্রকণ্ঠকে ঝাঝরা করে দিয়েছিলো কিছু কাপুরুষের বুলেট। যাদেরকে বাংলাদেশী বা বাঙালি বলা যাবে না। আরো দুঃখের বিষয় সেই খুনের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছিলো। অর্থাৎ এই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার করা যাবে না। এর চেয়ে কষ্টের আর কী আছে! এরপর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এই হত্যার বিচার করেছেন। এখনো যারা দেশের বাইরে পালিয়ে আছেন তাদেরকে দেশে এনেও বিচারের দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, বিশ্ব রাজনীতিতে আমরা দেখেছি একজন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশেই এই স্বাধীনতা এনে দেয়া পরিবারটিকে একবারে নিঃশেষ করে দেয়া হয়। যা ইতিহাসে চরমভাবে ঘৃণিত।

তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে বিশ্বমোড়লদের সামনে বঙ্গবন্ধু বলেছেন বিশ্ব আজ দু ভাগে বিভক্ত। শোষক ও শোষিত। তিনি বজ্রকণ্ঠে বলেন আমি শোষিতের পক্ষে। এই ঘটনায় ফিদেল কাস্ত্রো বলেছেন আজ থেকে বুলেট তোমার পেছনে ঘুরবে। এই ভবিষ্যতবাণীই সত্যি হয়েছিল।

যে মানুষটি মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বাঙালির অধিকার আদায়ে জেল খেটেছেন তাকেই বাঙালি হাতে খুন হতে হয়েছে। এসময় তিনি বঙ্গমাতার অবদানের কথাও স্মরণ করেন।

সর্বশেষ কবির উক্তি দিয়ে বলেন, যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরি যমুনা বহমান/ ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে অধ্যাক ডা. সেহরীন ফরহাদ সিদ্দিকা বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বনেতা ছিলেন, বঙ্গবন্ধু এখনও বিশ্বনেতা হিসেবেই আছেন। তার ওই বজ্রকণ্ঠ এখনো আমাদের কানে বাজে। আজ সত্যিই কালো দিন, আজ আমাদের কষ্টের দিন। শুধু শোক দিবসই নয়, প্রতিদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে আমাদের একটু একটু করে কাজ করা উচিত।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডা. সুলতানা রোকেয়া মান্নান, অধ্যাপক ডা. রাজিবুল আলম, প্রফেসর ডা. হাসিমুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এ কে এম আমিনুল হক, অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম আরিফ প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. তামান্না মাহমুদ উর্মি।

বাংলাদেশ জার্নাল/একে/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত