ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ধর্মঘট: চট্টগ্রামে লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন বন্ধ

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৪:৩৩  
আপডেট :
 ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৫:২৪

ধর্মঘট: চট্টগ্রামে লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন বন্ধ
চট্টগ্রাম নৌবন্দরে লাইটার জাহাজ। ছবি: প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বন্দরসহ সব নৌবন্দরে লাইটার জাহাজ ও অন্যান্য নৌযান রাখার জন্য পোতাশ্রয় নির্মাণ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালে পরীক্ষা কেন্দ্র, নৌ আদালত স্থাপনসহ ১০ দফা দাবিতে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছে নৌযান শ্রমিকরা। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে নিয়োজিত লাইটার জাহাজ, অয়েল ট্যাংকারসহ প্রায় সব ধরনের নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

শনিবার রাত ১২টা থেকে কর্ণফুলী নদীর ১৭টি ঘাট এবং বহির্নোঙরে অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রেখেছেন নৌযান শ্রমিকরা।

চট্টগ্রাম বন্দর এবং বহির্নোঙর থেকে সারাদেশের নৌরুটে অন্তত হাজার লাইটারেজ জাহাজ পণ্য আনা-নেয়া করে। এসব জাহাজে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। আমদানি করা ভোগ্যপণ্য, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ বিভিন্ন খোলা পণ্য নিয়ে বর্হিনোঙরে আসা মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজে) থেকে পণ্য খালাস হয় লাইটারেজ জাহাজে। এরপর নৌরুটে বিভিন্ন গন্তব্যে সেসব পণ্য নিয়ে যায় লাইটারেজ জাহাজগুলো।

রোববার (২৭ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ লাইটার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ১৫ নভেম্বর ১০ দফা দাবি নিয়ে এই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়। তাই মধ্যরাত থেকে বন্দরের বহির্নোঙরে রাখা বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সাধারণ শ্রমিকরা। একইসঙ্গে মাঝিরঘাট ও সদরঘাট এলাকার ১৮টি বেসরকারি ঘাটেও লাইটার জাহাজে করে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানরত ৫২টি মাদার ভ্যাসেলের মধ্যে ৩২টি থেকে পণ্য খালাস হওয়ার শিডিউল ছিল। কিন্তু রাত ১২টা থেকে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেয়ায় জাহাজগুলো অলস বসে আছে। কর্ণফুলী নদীতেও অলস বসে আছে শতাধিক লাইটারেজ জাহাজ ও অয়েল ট্যাংকার।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে।

শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি

নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেয়াসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ করা, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ শতাংশ কার্যকর করে সব লাইটার জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।

এর আগে, লাইটার জাহাজের শ্রমিকদের ওঠা–নামায় ব্যবহৃত চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল, সাঙ্গু নদের মুখ খনন করে লাইটার জাহাজের নিরাপদ পোতাশ্রয় করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ১০ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে চট্টগ্রামে লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহনের কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল লাইটার জাহাজ শ্রমিকরা। পরে পতেঙ্গায় লাইটার জাহাজের শ্রমিকদের ওঠা–নামায় ব্যবহৃত চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু ও শ্রমিকদের কাছ থেকে ঘাটে টাকা না নেয়ার সিদ্ধান্ত আসায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে লাইটার জাহাজ শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত