ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

পবিত্র জল ছিটিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিল মারমা সম্প্রদায়

  হিমেল চাকমা, রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০৮

পবিত্র জল ছিটিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিল মারমা সম্প্রদায়
পবিত্র জল ছিটিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিল মারমা সম্প্রদায়। ছবি: প্রতিনিধি

পবিত্র জল ছিটিয়ে পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে দ্বিতীয় বৃহৎ আদিবাসী জনগোষ্ঠী মারমা সম্প্রদায়। নিজেদের ঐতিহ্যবাহি পোষাক পড়ে মারমাদের এ জল উৎসবে যোগ দেন পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারো মানুষ। এতে কানায় কানায় পুর্ণ হয়ে উঠে রাঙামাটি চিংহ্লামং মারী স্টেডিয়াম।

মঙ্গলবার দুপুরে রাঙামাটি চিংহ্লা মং মারী স্টেডিয়ামে ফিতা কেটে ও সাংগ্রাইয়ের পবিত্র জল ছিটিয়ে জল উৎসবের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এরপর মারমা তরুণ তরুণীরা মেঠে উঠেন মৈত্রীর জল ছিটানো উৎসবে।

বেজে উঠে সাংগ্রাইয়েরে জনপ্রিয় গান ‘সাংগ্রাঁইং মা ঞি ঞি ঞা ঞা রি, কাজাই গাই পামে গানটি। এ গানের সুরে নাচে গানে মেঠে উঠেন মারমা তরুণ তরুণীরা। যার বাংলা অর্থ দাড়ায় ‘এসো এসো সাংগ্রাঁইতে এক সঙ্গে মিলে মিশে জলকেলিতে আনন্দ করি’

জল উৎসবে প্রধান অতিথি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, মারমাদের এ উৎসব দেশের সংস্কৃতিকে উজ্জল করেছে। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতির খুজে পাওয়া যায়। এ উৎসব এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। এ দিনটির জন্য পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের মানুষ অপেক্ষায় থাকে।

এ সাংগ্রাই জল উৎসবে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি।

মারমা সংস্কৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্ব জল উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রি. জে সোহেল আহমেদ, রাঙামাটি বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো আনোয়ার লতিফ খান, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ।

মারমারা অনুসরণ করে বার্মিজ বর্ষপঞ্জি ম্রাইমা সাক্রয় অনুযায়ী ১৩৮৫ সনের শেষ দিন ছিল মঙ্গলকার। আগামীকাল বুধবার শুরু হবে নতুন বছর ১৩৮৬। তাই পুরাতন বছরের সমস্ত গ্লানী মুছে ফেলতে পবিত্র জল কেলীতে মেঠে উঠেন মারমা সম্প্রদায়।

এই উৎসব চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। মারমা ভাষায় এই উৎসবকে বলা হয় “মাহা সাংগ্রাই রিলং পোয়ে”।

জানা যায়, রীতি অনুযায়ী মারমার জনগোষ্ঠীর লোকজন বছর শেষে এক সপ্তাহ আগে থেকে বুদ্ধ মুর্তি ও বয়োজৈষ্ঠদের স্নান করান। মারমারা বিশ্বাস করেন বয়োজৈষ্ঠ ও বুদ্ধকে স্নান করানোর পরে এ পানির সংস্পর্শে এসে পৃথিবীর সব পানি পবিত্র হয়ে উঠে। এ পবিত্র পানি দিয়ে স্নান করানো হলে পুরনোর বছরে সকল দু:খ কষ্ট গ্লানী মুছে যায়। নতুন বছরে বয়ে আনে সুখ শান্তি। মারমারা দীর্ঘকাল ধরে এই অনুষ্ঠান পালন করে আসছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত