ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাভারে ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎহীন ৮ পরিবার

  সাভার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৫৮

সাভারে ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎহীন ৮ পরিবার
সাভারে ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎহীন ৮ পরিবার। ছবি: প্রতিনিধি

প্রভাবশালীর হাতে জিম্বি ৮ পরিবার বিদ্যুৎহীন জীবন যাপন করছে অসহায় পরিবারগুলো। বিদ্যুতের খুঁটি আছে, তার আছে সবই আছে কিন্তু বিদ্যুৎ নেই। ১০ বছর হয়ে গেলও পাচ্ছে না বিদ্যুতের সুবিধা। প্রভাবশালীদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে বনগাঁও ইউনিয়নের কোটাপাড়া গ্রামের ৮ পরিবার।

বিদ্যুৎ অফিসের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ৮ পরিবারের মানুষ। বিদ্যুৎ যেনো সোনার হরিণের থেকেও বেশি দামি হয়ে পড়েছে তাদের কাছে। একাধিকবার বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গিয়েও পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। এর কারণ জানে না কেউ।

ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানায়, সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের কোটাপাড়া মহল্লার ৬ পরিবার ২০১৪ সাল থেকে কয়েক দফায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের লোকজনের বাঁধার মুখে পড়ে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেননি। বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার জন্য আবেদনকারীদের বাড়ির চারপাশে চেয়ারম্যান সাইফুলের জমি রয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান কৌশলে ওইসব জমি কেনার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগে বাঁধা দিচ্ছেন।

ভুক্তভোগী আম্বিয়া খাতুন বলেন, ২০১০ সালে এখানে বাড়ি করেছি। এরপর আমরা বিদ্যুতের খুঁটির জন্য আবেদন করলে খুঁটি বসানো হয়। পরে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে বাঁধা দিলে আর সংযোগ দেয়নি পল্লী বিদ্যুৎ।

ভুক্তভোগী হালিমা বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে আমাদের এখানে বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ অফিসে গেলে বলে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া বিদ্যুৎ দেয়া যাবে না। পরে চেয়ারম্যানের কাছে গেলে বলে আমি ৪৪০ লাইন টানব, তখন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে।

বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ নেয়ার জন্য একটি রাস্তার প্রয়োজন হয়। এর আগে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। যার কারণে আমি বলেছি, এক জনের বাড়ি থেকে অন্য জনের বাড়িতে লাইন নিতে হলে কারও জমির ওপর দিয়ে যেন না নেয়া হয়। এজন্য তাদের আগে রাস্তা তৈরির পরামর্শ দিয়েছি।

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার এম. এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পরেই আমাদের লাইন নির্মাণ ও কারিগরি টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। সেখানে স্থানীদের বাঁধার কারণে কয়েকটি লাইন নির্মাণ করা যায়নি। এখন যদি স্থানীয়ভাবে বাঁধা নিরসন করে আমাদের জানানো হয়। তবে আমরা পুনরায় ট্রেন্ডার করে লাইন নির্মাণ করব।

সাভার মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যদি অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ যাবে। কিন্তু সাভারের মতো একটি উপজেলায় কেউ বিদ্যুৎহীন থাকবে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা চাই যথা সময়ের মধ্যেই সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। এজন্য জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।

ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ আমাকে জানায়নি। সবার বিদ্যুৎ নেয়ার অধিকার রয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করব।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত