ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রেমিকা ও স্ত্রী দুজনই অন্তঃসত্ত্বা, যুবক পলাতক

  ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ মে ২০১৯, ২২:৩৫

প্রেমিকা ও স্ত্রী দুজনই অন্তঃসত্ত্বা, যুবক পলাতক

প্রেমিকা অন্তঃসত্ত্বা। অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে প্রেমিকা অবস্থান নিয়েছেন প্রেমিকের বাড়িতে। প্রেমিক আবার অন্য একজনকে বিয়ে করেছে এরই মধ্যে। প্রেমিকের স্ত্রীও অন্তঃসত্ত্বা। ঠিক এমন অবস্থায় উধাও ওই যুবক।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চৌধুরীকান্দা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটেছে। ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী গত শুক্রবার থেকে লুৎফুর তালুকদারের (২৫) বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। দুদিন ধরে স্ত্রীর মর্যাদা ও অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় ফিরে পেতে ওই বাড়িতে আকুতি-মিনতি করে যাচ্ছে ওই কিশোরী। তবে মন গলছে না লুৎফুরের স্বজনদের। জানা যায়, লুৎফুর এরই মধ্যে তার মামাতো বোনকে বিয়ে করেছে। লুৎফুরের স্ত্রীও অন্তঃসত্ত্বা।

অবস্থান নেওয়া ওই কিশোরীর বাবা ভ্যানচালক। কিশোরীর ওই অবস্থার কথা পুলিশ জানতে পেরেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) রবিউল ইসলাম ও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাঈদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ওই কিশোরীর প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। জানা যায়, ওই কিশোরী ৪০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। শনিবার সকালে প্রেমিক লুৎফুর তালুকদারের বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা করে ওই কিশোরীর পরিবার। এতে আসামি করা হয়েছে প্রেমিক লুৎফুর তালুকদারকে। মামলা নম্বর ৫১।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আশুতোষ বলেন, ‘মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে ওই কিশোরীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের অভিনয় করে আসছিল ওই গ্রামের ছিদ্দিক তালুকদারের ছেলে লুৎফুর তালুকদার। লুৎফুর তালুকদার বছরখানেক আগে ওই গ্রামের পাশের একটি মেয়েকে বিয়ে করে। বিয়ের পরও প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই কিশোরীর সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক করে লুৎফুর। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায়। বর্তমানে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হলেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে না পেরে ওই কিশোরী প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়। মামলা রেকর্ডের পর আমরা লুৎফুরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। ওই কিশোরীকে আজ রোববার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য নেওয়া হবে।’

ওই কিশোরীর বাবা বলেন, ‘দিনমজুরি করে চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনোরকম সংসার চলে আমার। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় টাকার জন্য মেয়েটিকে মিলে কাজ করতে পাঠাই। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে লুৎফুর আমার মেয়ের এই সর্বনাশ করেছে। আমি আমার মেয়ের মর্যাদা রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই।’

ওই কিশোরী বলে, ‘আমার সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর ধরে প্রেম করে আসছে লুৎফুর। আমার গর্ভে সন্তান রয়েছে বিষয়টি লুৎফুর জানার পর আমাকে ঘরে তুলে নেবে এবং স্ত্রীর মর্যাদা দেবে বলে কয়েক মাস ধরে ঘোরাচ্ছে। আমার সন্তান প্রসবের সময় হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি আমি পরিবারকে জানাই। আমার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে লুৎফুর, আমি স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে সমাজে বাঁচতে চাই।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লুৎফুরের বাবা সিদ্দিক তালুকদার বলেন, ‘আমার বাড়িতে শুক্রবার থেকে অবস্থান নিয়েছে সাদিয়া। এদিকে আমার ছেলে বিবাহিত ও সেই স্ত্রীও অন্তঃসত্ত্বা।’ তিনি এমন ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।

ভাঙ্গা থানার ওসি কাজী সাইদুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে, মামলা নম্বর ৫১। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মামলা রেকর্ডের পর আমরা লুৎফুরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ ঘটনার ব্যাপারে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না প্রশাসনের পক্ষ থেকে।’

  • সর্বশেষ
  • পঠিত