ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসছে মৃত কচ্ছপ

  কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ মে ২০১৯, ২১:২৭

কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসছে মৃত কচ্ছপ

কুয়াকাটার সৈকতে ভেসে আসছে সামুদ্রিক মরা কচ্ছপ। বিরল প্রজাতির মৃত এ কচ্ছপগুলো এর আগে কখনো দেখেনি স্থানীয়রা। এক একটির ওজন ২০ থেকে ৩০ কেজি, আবার কোনটির ওজন আরো বেশি। জলপাই রংয়ে মৃত কচ্ছপগুলোর পিঠের অংশে ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। চোখ এবং মুখের অংশে কাল শেড থাকায় দূর থেকে এটি অন্য কোনো প্রাণী মনে করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সৈকতের দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার বিস্তৃর্ণ এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ডজন খানেক মারা কচ্ছপ দেখতে পেয়েছে স্থানীয়রা। এসব জলজ প্রাণী জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাধীনভাবে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা, পানি দূষণ, খাদ্য সংকট, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উপকূলের কাছাকাছি এসে জালে আটকা পড়ে মারা পড়ছে বলে স্থানীয়রা প্রাথমিক ধারণা করছে।

এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বনবিভাগ মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, মরা কচ্ছপগুলো যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায় এ জন্য ব্যবস্থা নেবে বনবিভাগ।

স্থানীয় জেলেদের ধারনা, মা কচ্ছপগুলোর প্রজনন মৌসুম বিধায় সৈকতের বালুতে ডিম পাড়ার জন্য হয়তো আসছিলো। তবে জালে আটকা পড়ে এগুলো মারা যাচ্ছে।

অপরদিকে, কচ্ছপ বিশেষজ্ঞদের মতে জলবায়ু পরিবর্তনগত কারণে সাগরের কচ্ছপ তীরে ফিরতে শুরু করেছে। এছাড়া সাগরের দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে উপকূলে আসার সময় মাছ ধরার ট্রলারের পাখায় আঘাত পেয়ে মা কচ্ছপ মারা যেতে পারে।

অনেকের মন্তব্য তারা বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ দেখেছেন, কিন্তু এমন প্রজাতির কচ্ছপ এই প্রথম দেখলেন। কচ্ছপগুলো সৈকত থেকে অচিরেই না সরানো হলে পঁচে এলাকার আবহওয়া দূষিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথবা সমুদ্রতীরে বেওয়ারিশ কুকুর মৃত এ কচ্ছপগুলো ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করার আশংকা রয়েছে, যা পর্যটকদের বিড়ম্বনার কারণ হতে পারে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

জেলেদের সংগঠন আশার আলো সমবায় সমিতির সভাপতি নিজাম শেখ জেলেদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, রামনাবাদ ও আন্ধারমানিক চ্যানেলের নদীর সংযোগস্থলও সমুদ্রের মোহনায় অবাধ বিচরণ সামুদ্রিক কচ্ছপের। ডিম পাড়ার জন্য বেলাভুমিতে আসার সময় জেলেদের জালে আটকা পড়ে এগুলো মারা যেতে পারে। কুয়াকাটা সৈকতের লেম্বুরচর, ঝাউবন, গঙ্গামতিও কাউয়ারচর এলাকার একাধিক জেলের সাথে কথা বললে তারা জানায়, ৪-৫ দিন ধরে কুয়াকাটা সৈকতে মরা কচ্ছপ দেখতে পেয়েছেন। এছাড়া চলতি বর্ষা মৌসুমসহ গত বছরে অন্তত ৫টি শুশুক, ১২ ডলফিন, ২টি তিমিসহ সেটেশান প্রজাতির বড় বড় মাছ মরে পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান জানান, কচ্ছপের গায়ে যেহেতু আঘাতের চিহ্ন নেই, সেহেতু দূষিত পানির কারণে এ গুলোর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জানান, কচ্ছপের গতিপথে জেলেরা জাল ফেলার কারণে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, মৃত এ কচ্ছপগুলোকে সরিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যাতে কোনো পর্যটকের ক্ষতির কারণ না হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত