চলনবিলের মাছ কারেন্ট জালে সর্বনাশ
পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০১৯, ০১:০৯
পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ফরিদপুরসহ চলনবিলের বিভিন্ন হাটে-বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। চলনবিল অধ্যুষিত এই উপজেলাগুলোর বিভিন্ন খাল-বিল ও নদ-নদীতে বর্ষার পানি প্রবেশ করার সাথে সাথে এক শ্রেণির অসাধু মাছ শিকারি কারেন্ট জাল, বাদাই জালসহ নানা নিষিদ্ধ সরঞ্জাম দিয়ে মাছ শিকারে মেতে উঠেছেন। মজুত-বিক্রয় ও বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ জেনেও এক শ্রেণির পাইকারি ব্যবসায়ী কারেন্ট জাল-বাদাই জাল মজুদ করে দেদারছে বিক্রি করছেন। ‘উজিরে খামোখা’র ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে উপজেলা মৎস্য দপ্তর। এতে বিলুপ্ত হচ্ছে চলনবিলের মিঠা পানির দেশীয় প্রজাতির মাছ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলনবিল পাড়ের চাটমোহর উপজেলার অমৃতকুন্ডা (রেলবাজার), নতুনবাজার, মির্জাপুর, শরৎগঞ্জ, ছাইকোলা, হান্ডিয়াল, পার্শ্বডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতি হাট-বাজারে শত শত কেজি নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও বাদাই জাল বিক্রি হয়। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে এক শ্রেণির অসাধু মৎস্যজীবী এই জালের মুল ক্রেতা। আর বেশকিছু পাইকারি ব্যবসায়ী কারেন্ট জাল আমদানি করে গোপন জায়গায় রেখে বিক্রি করছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে কারেন্ট জাল বেশি বিক্রি হয় মির্জাপুর, রেলবাজার ও শরৎগঞ্জ হাট-বাজারে। খোদ পৌর শহরের পুরাতন বাজারের এবং মির্জাপুর এলাকার বেশ কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী কারেন্ট জাল ও বাদাই জাল বিক্রি কর আসছেন দীর্ঘদিন। আর এসব পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে এনে ক্ষুদ্র বিক্রেতারা প্রতিটি হাট বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন।
আর মাছ ধরার এসব নিষিদ্ধ উপকরণ বিক্রির বিষয়টি উপজেলা মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও অবগত রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকারি জাল বিক্রেতা বলেন, মৎস্য দপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এ সময়টাতে বিশেষ সুবিধা নিয়ে থাকেন। যে কারণে তারা হাট-বাজার মনিটরিং বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন না। তাই তাদের এসব নিষিদ্ধ জাল বিক্রি করতে কোন অসুবিধা হয় না।
এদিকে এসব জালের কারণে মারা পরছে ডিমওয়ালা মাছ। আর বিলুপ্ত হচ্ছে নদ-নদীর মিঠা পানির রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, চিতল, শোল, চেলা, নন্দই, চাপিলা, টেংরা, টাকি, গোলসা, কালী বাউস, খোলসা, মোয়া, পাতাশি, পাবদা, শিং, মাগুর, কৈ, বৌ ও ফলি প্রভৃতি মাছ।
জানতে চাইলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, ‘সম্প্রতি এসিল্যান্ড সাহেবকে নিয়ে মির্জাপুর হাট ও হান্ডিয়াল এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে এবং বেশকিছু বাদাইজাল জব্দ করে পোড়ানো হয়েছে। তবে আরো কিছু এলাকায় বাদাই জাল দিয়ে মাছ মারা হচ্ছে বলে শুনেছি। দু-একেই সে সব জায়গাতেও অভিযান চালানো হবে।’ বিশেষ সুবিধার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অনেকে এসব বলে থাকে। বিষয়টি সঠিক নয়। কে এসব সুবিধা নেয় নিদিষ্ট করে বলতে পারলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ