শুভ কেঁদে কেঁদে বলে ‘মা কোথায়, আমি মার কাছে যাব’
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৫
চট্টগ্রামের পাথরঘাটার ব্রিকফিল্ড রোড এলাকার বড়ুয়া বিল্ডিংয়ে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে জুলেখা খানম ফারজানা (৩৪) নামে এক গৃহবধু রয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, স্ত্রী জুলেখাকে খুঁজতে ছেলে আতিউর রহমান শুভকে (৬) নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে যান স্বামী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান।
এসময় ছেলে শুভ ‘মা কোথায়? মাকে ডাকো। আমি মার কাছে যাব। ওহ বাবা, মাকে ডাকো না’ এভাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার মাকে খুঁজছিল। শুভ তো জানে না তার মা জুলেখা ও বড় ভাই আতিকুর রহমান (০৮) গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন।
বড় ছেলে আতিকুর রহমানকে কোচিংয়ের নেওয়ার পথেই মা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শারমিন সুলতানা নামে তাদের এক নিকটাত্মীয়।
তিনি বলেন, শুভ ও আতিকুর দুই ভাই। দুই ভাই-ই পাথরঘাটা এলাকার সেন্ট প্লাসিড স্কুলে পড়ে। শুভ প্লে-ইভিনিং আর আতিকুর দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। শুভর বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ৭টার দিকে শুভকে সেন্ট প্লাসিড স্কুলে পরীক্ষার হলে দিয়ে বাসায় ফিরে আসেন মা জুলেখা খানম। পরবর্তীতে সাড়ে ৮টার দিকে আবারও বাসা থেকে বেরিয়ে বড় ছেলেকে কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছিল। বাসা থেকে হেঁটে কোতোয়ালী মোড়ের দিকে যাচ্ছিল মা-ছেলে। পথিমধ্যে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ হয়ে মা-ছেলে মারা গেলেন’।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মা জুলেখা খানম দুই ছেলের লেখাপড়া নিয়ে খুব দায়িত্বশীল ছিলেন।
দুপুর দেড়টার দিকে চমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জুলেখা খানমের স্বামী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান বিলাপ করে কাঁদছেন। তখন তিনি বলেন, আমাকে রেখে কেন চলে গেলে। আমাকেও নিয়ে যেতে। আমি কী দোষ করেছি। এভাবে কেন তোমার মৃত্যু হলো। আল্লাহ আমাকেও নিয়ে যাও। আমি কাকে নিয়ে বাঁচব। আমার শুভকে এখন কে দেখবে? আমাকেও নিয়ে যাও আল্লাহ।
কাঁদতে কাঁদতে আতাউর অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পাশেই বসা শুভ। পরীক্ষা শেষ করে এসে তার মাকে খুঁজছে।
শুভ কেঁদে কেঁদে বলে ওঠে ‘আমার মা কোথায়, মাকে ডাকো। আমি মার কাছে যাব। আমার মা স্কুল থেকে আমাকে আনতে যায়নি কেন? মা কই? বাবা-মাকে ডাকো।’