ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ক্লাস করতে নৌকা ভাড়া করে টাওয়ারের কাছে যেতে হয়

  জবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২০, ১৬:১৬  
আপডেট :
 ২৭ জুলাই ২০২০, ১৭:৩১

ক্লাস করতে নৌকা ভাড়া করে টাওয়ারের কাছে যেতে হয়
প্রতীকী ছবি

ইউজিসির নির্দেশে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে অনলাইন ক্লাস। অনলাইন ক্লাসগুলো সাধারণত জুম কিংবা গুগল মিটের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এর জন্য প্রয়োজন স্মার্ট ডিভাইস আর উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থা।

গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট গতির অবস্থা অনেকটাই নাজুক। ইতোমধ্য করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছে। ডিভাইস কিংবা ইন্টারনেটের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে বেগ পেতে হচ্ছে।

তাছাড়া উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বন্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী ইয়ার ড্রপের ভয়ে বিভিন্নভাবে ক্লাসে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করে। তেমনই এক শিক্ষার্থী জবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মৃদুল হাসান। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন কিভাবে তিনি কষ্ট করে চালিয়ে যাচ্ছেন অনলাইন ক্লাস।

তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-

আমি মৃদুল হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। আমাকে অনলাইনে ক্লাস করতে হয়। আমাকে প্রতিদিন এমবি কিনতে হয়। অন্যের কাছ থেকে ফোন চেয়ে নিতে হয় ক্লাস করার জন্যে (নিজের স্মার্ট ফোন নাই)। আমাকে ক্লাস করার জন্য নৌকা ভাড়া করতে হয় টাওয়ারের কাছে যাওয়ার জন্য (নাইলে নেটওয়ার্ক পাই না)। আমাকে প্রতিদিন বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার করতে হয় এমবি কেনার জন্য। আমাকে পরিক্ষায় পাস করার জন্য ক্লাস করা উচিত কারণ পরিবারের সঞ্চয়, আশা ও স্বপ্ন সবই আমাকে ঘিরে।

সমস্যাটা যেখানে, আমার বাড়ি নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলাধীন মশিন্দা গ্রামে (চলনবিল এর প্রাণকেন্দ্র)। বাড়ির পাশে বন্যার পানি থৈ থৈ করছে, রাস্তা-ঘাট সব ডুবে গেছে, এমনকি ঘরের মধ্যেও কখন জানি পানি ঢুকে পড়ে। যেখানে ফোনে কথা বলার নেটওয়ার্ক পাই না (২জি), সেখানে ৩জি/৪জি নেটওয়ার্ক তো বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না। বন্যার কারণে বিলের ধানগুলোতো ইতোমধ্যে ডুবেই গেছে। নিম্নবিত্ত পরিবারের আরো তো সমস্যা আছেই!

ফলাফলটা কি হবে, ফোন নাই, এমবি নাই, নেটওয়ার্ক নাই তাই ক্লাস করা হবে না। পরিক্ষার খাতা ফাঁকা, যার জন্য সেমিস্টার ড্রপ।পরিবারের স্বপ্ন ভঙ্গ, গ্রামের মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ ও বন্ধুদের স্বপ্ন ভঙ্গ। যার কারণে ছেলেটির স্বপ্ন ভঙ্গ, হতাশা ও সবশেষে যা হয়ে থাকে সচারাচর তাই হয়তো হবে। দোষটা কে নিবে? করোনা? বন্যা? নেটওয়ার্ক? নাকি নিম্নবিত্ততা?

জানি না কি আছে জীবনে, জীবন আমার, স্বপ্ন আমার, ভবিষ্যৎ আমার কিন্তু এগুলো ভেঙে ফেলার অধিকার অন্যের!

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত