ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাদক-অসামাজিক কাজ থেকে বিরত রাখে সহশিক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ জুন ২০২২, ১৭:৫৪  
আপডেট :
 ২১ জুন ২০২২, ১৯:০১

মাদক-অসামাজিক কাজ থেকে বিরত রাখে সহশিক্ষা: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যত বেশি ক্রীড়া-সংস্কৃতি, বইপড়া ও সহশিক্ষামূলক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে, শিক্ষার্থীদের তত বেশি মাদক-অসামাজিক কাজ থেকে বিরত রাখা যাবে।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২২ এর জাতীয় পর্যায়ের পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। করোনায় আক্রান্ত থাকায় মন্ত্রী ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এ অনুষ্ঠানে দেশসেরা শিক্ষক-প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, এ সব প্রতিযোগিতায় যারা অংশগ্রহণ করে তারা পাঠ্যবইয়ের বাইরেও কিছু না কিছু শিখে আসে। যা কর্মজীবনে পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে কাজে লাগে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, প্রাতিষ্ঠানিত গতানুগতিক শিক্ষার গন্ডির বাইরে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, দক্ষতা ও বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে। শ্রেণিকক্ষের দক্ষতা কর্মজীবনে খুব একটা কাজে আসে না। কর্মবজীবনে মূলত কাজে আসে ক্লাসের বাইরের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের অর্জনগুলো।

উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, জাতীর পিতার যে দর্শন ছিল ‘এপ্লাইড স্কিল, এপ্লাইড নলেজ, বিজ্ঞান মনস্কতা’ এগুলো আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ও কারিকুলামে নিয়ে আসা। আমাদের শিক্ষকমণ্ডলীকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে আগামী প্রজন্মকে এসব দক্ষতা অনুযায়ী শিখিয়ে নলেজ ইকোনমিতে প্রস্তুত করা। সেই নলেজ ইকোনমিকতে সবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রলয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন-শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেহাল আহমদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন-জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২২ এর জাতীয় পর্যায়ের পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক।

জাতীয় পর্যায়ে দেশসেরা হলেন যারা-

জাতীয় পর্যায়ে সেরা প্রতিষ্ঠান

এ বছর স্কুলপর্যায়ের সেরা নির্বাচিত হয়েছে রাজশাহীর সরকারি পি এন (প্রমথনাথ) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। আর কলেজপর্যায়ে সেরা নির্বাচিত হয়েছে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ। এছাড়া কারিগরি বিভাগে সেরা হয়েছে রংপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

শ্রেষ্ঠ শিক্ষক

২০২২ সালের দেশের শ্রেষ্ঠ স্কুলশিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের তামিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান জাবেদা আক্তার জাহান, শ্রেষ্ঠ কলেজশিক্ষক হয়েছেন মানিকগঞ্জের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, শ্রেষ্ঠ মাদরাসাশিক্ষক ডেমরার তারিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার প্রধান ড. মুহাম্মদ আবু ইউছুফ।

এছাড়া কারিগরি বিভাগে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রধান প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন বিজয়ী হয়েছেন।

শ্রেষ্ঠ শ্রেণিশিক্ষক

চলতি বছর স্কুলপর্যায়ে সেরা শ্রেণিশিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন বরিশালের সরকারি ডব্লিউ বি ইউনিয়ন মডেল ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক মোসা. সেলিনা আক্তার, কলেজপর্যায়ে সাভার সরকারি কলেজের শিক্ষক ড. এ কে এম সাঈদ হাসান, মাদরাসা বিভাগে বরিশালের সাগরদী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগে দিনাজপুরের পার্বতীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক পবন কুমার সরকার।

শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী

স্কুলপর্যায়ে ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজপর্যায়ে রাজবাড়ী সরকারি কলেজ, মাদরাসাপর্যায়ে চট্টগ্রামের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া কামিল মাদরাসা ও কারিগরিপর্যায়ে লালমনিরহাটের সরকারি আদিতমারী গিরিজা শংকর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা সেরা নির্বাচিত হয়েছে।

শ্রেষ্ঠ জেলা-উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা

চলতি বছর শ্রেষ্ঠ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এছাড়া উপজেলাপর্যায়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ভুঞা শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে, গত ৫-৬ জুন কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীতে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে ১৫ ক্যাটাগরিতে সাংস্কৃতিক কারিকুলামসহ মোট ২১৩ জনকে ২০২২ সালের বর্ষসেরা ঘোষণা করা হয়।

সাংস্কৃতিক কারিকুলামের মধ্যে ছিল কেরাতপাঠ, হামদ/নাত, বাংলা রচনা, ইংরেজি রচনা প্রতিযোগিতা, ইংরেজি বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, বাংলা কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক (একক), দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্র ও নজরুল, উচ্চাঙ্গ সংগীত, লোকসংগীত (ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি, লালনগীতি), জারি গান (দলভিত্তিক), নির্ধারিত বক্তৃতা, নৃত্য (উচ্চাঙ্গ) ও লোকনৃত্য।

এতে দেশের ৯ বিভাগের প্রতিযোগিদের চারটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি গ্রুপে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের হিসেবে মোট ১৮০ জনকে বিজয়ী হিসেবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এসব প্রতিযোগিতায় সারাদেশের মোট ৮৩৬ জন অংশ নেয়। এছাড়াও বিএনসিসি, রোভার, স্কাউট, গার্ল গাইডস ও রেঞ্জার ক্যাটাগরিতে তিনজন করে ৯ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/একে/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত