ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঢাবিতে পালিত হবে নজরুলের মৃত্যু বার্ষিকী

  ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২১, ০৯:৩২  
আপডেট :
 ২৭ আগস্ট ২০২১, ০৯:৪৮

ঢাবিতে পালিত হবে নজরুলের মৃত্যু বার্ষিকী

প্রেম ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম যার গান, কবিতা, সাহিত্য যুগে যুগে বাঙালির জীবন সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণার উৎস। বাংলা কবিতায় যিনি এনেছিলেন সম্পূর্ণ এক নতুন সুর, ছিলেন মানবতার প্রচারক, গানে মিশিয়েছিলেন বিচিত্র ধারা। আজ সেই কবির ৪৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শুক্রবার ২৭ আগস্ট ২০২১ (১২ ভাদ্র ১৪২৮ বাংলা) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে।

১৯৭৬ সালের আগস্ট মাসের এই দিনে পিজি হাসপাতালে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন তিনি।

নজরুল ইসলাম জন্মেছিলেন দুখু মিয়া হয়ে। জীবিকার তাগিয়ে ছিলেন রুটির দোকানে, কখনো মসজিদের ইমাম, কখনো সৈনিক, কখনো বা ছিলেন সাংবাদিক, রাজনৈতিক। আর মৃত্যুকালে তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলার জাতীয় কবি।

মাঝখানে ৭৭ বছর দাসত্বের শৃঙ্খলে বদ্ধ জাতিকে দেখিয়েছেন মুক্তির পথ, ধর্ম ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে গেয়েছেন মানবতার গান, উপনিবেশ শাষণের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন প্রত্যক্ষ সংগ্রামে, লিখেছেন বিদ্রোহী', 'ভাঙার গান', এর মতো কবিতা এবং ধূমকেতুর মতো সাময়িকী।

জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কারণে কারাবন্দী হয়েছিলেন নজরুল ইসলাম। বন্দী অবস্থায় লিখেছিলেন 'রাজবন্দীর জবানবন্দী।

নজরুল ইসলাম জন্মেছিলেন ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মে) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত হয়েছেন ছোট থেকেই, এজন্য তাকে ডাকা হতো দুখু মিয়া নামে। তার পিতা কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তাকে দেয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা।

সেই সাথে তার রচিত 'চল্ চল্ চল্' গানটিকে করা হয় রণসঙ্গীত। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাজী নজরুলকে ডিলিট উপাধিতে ভূষিত করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে দেয়া হয় একুশে পদক।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা।

প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

গানের ছন্দে লিখে গিয়েছিলেন মৃত্যুর পরবর্তী বাসনা, লিখেছিলেন 'মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই/যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।’ সেই বিবেচনায় জাতীয় কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবর দেয়া হয়।

কর্মসূচি :

জাতীয় কবির ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শুক্রবার বাদ ফজর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়া’য় কোরানখানি অনুষ্ঠিত হবে।

সকাল সাতটা পনের মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে গমন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।

এছাড়া সকাল দশটা ত্রিশ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচনা সভায় নজরুল বিশেষজ্ঞ হিসেবে জাতীয় অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখবেন। সকাল সাতটা ত্রিশ মিনিটে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে।

বিকেল ৪:০০টায় অনলাইনে নজরুল বিষয়ক আলোচনানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত