ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফারাওয়ের অভিশাপ! ঘুরে যাচ্ছে ৪০০০ বছরের পুরনো মূর্তি?

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ১০ মে ২০২২, ১২:৫৬  
আপডেট :
 ১০ মে ২০২২, ১৭:০৩

ফারাওয়ের অভিশাপ! ঘুরে যাচ্ছে ৪০০০ বছরের পুরনো মূর্তি?

ফারাওয়ের অভিশাপ বা মমির অভিশাপ! কথাটা শুনতে অবাক লাগলেও এর পেছনে রয়েছে অনেকগুলো বিস্ময়কর ঘটনা। এটি এমন এক অভিশাপ, যা ফারাওয়ের মমির পিরামিডে ঢুকলেই গ্রাস করে। মূল্যবান সম্পদ লুটের আশায় পিরামিডে ঢোকা সাধারণ চোর থেকে শুরু করে ইতিহাস সন্ধানের তাড়নায় প্রবেশ করা প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যন্ত কেউই এ অভিশাপের হাত থেকে মুক্তি পাননি!

দাবি করা হয়, এ পিরামিডগুলোতে ঢুকলেই কোনও না কোনও কারণে প্রবেশকারীর মৃত্যু ঘটতো। এরকম একাধিক ঘটনার প্রমাণ ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলেই বেরিয়ে আসে।

মিশরের মূর্তির এমনই রহস্য এখনও রয়েছে। ম্যানচেস্টার জাদুঘরের এক মিশরীয় মূর্তি, যা দীর্ঘদিন ধরে পর্যটকদের টানছে। হাজার চেষ্টা করেও ৮০ বছর ধরে জাদুঘরে-থাকা এ মূর্তির রহস্য সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।

১৮০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের এ মূর্তি একটি মমির সমাধির ধ্বংসাবশেষে পাওয়া গিয়েছিল। পরে এ মূর্তির জায়গা হয় ম্যানচেস্টারের জাদুঘরে। কালো পাথর কেটে তৈরি এ মূর্তির নাম, নেব-সেনু।

২০১৩ সালে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ হঠাৎ একদিন লক্ষ্য করেন, চার হাজার বছর পুরনো এ মূর্তি প্রতিদিনই ১৮০ ডিগ্রি করে ঘুরে যাচ্ছে। পর পর কিছুদিন একই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন জাদুঘরের কর্মীরা। দেখেন, প্রতিদিন নিজে থেকেই পেছন দিকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে রহস্যময় মূর্তিটি। তবে রাতের অন্ধকারে নয়, দিনের বেলাতেই দিক পরিবর্তন করতে দেখা যাচ্ছিল নেব-সেনু মূর্তিকে। এর পরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জাদুঘর কর্মীদের মধ্যে। আতঙ্কে মূর্তির ধারেকাছে ঘেঁষতে চান না কেউ।

প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে ফারাওয়ের অভিশাপ বলেই বর্ণনা করতে শুরু করেন অনেকে।

ওই জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক ক্যাম্পবেল প্রাইস জানান, একমাত্র তার কাছেই জাদুঘরের চাবি থাকে। তাই অন্য কোনও ব্যক্তির জাদুঘরে ঢুকে মূর্তি পেছনের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিষয়টিকে খতিয়ে দেখার জন্য মূর্তির সামনে ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরদিন ক্যামেরাতে যা ধরা পড়ে, তা দেখে অবাক হন অনেকেই।

ভিডিওতে দেখা যায়, খুব ধীরে ধীরে নিজে থেকেই ঘুরে যাচ্ছে ইঞ্চি দশেকের ওই রহস্যময় মূর্তি। প্রাইসের দাবি, অতীতে মূর্তির পায়ে বিভিন্ন রকমের নৈবেদ্য রাখা হত। মূর্তির পেছনে হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে ‘রুটি, মদ এবং গবাদি পশুর মাংস’-এর কথা লেখা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রাইস দাবি করেন, মূর্তিটি নিজে থেকেই ঘুরে যাওয়ার পেছনে কোনও আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে।

প্রাচীনকালে মিশরীয়রা বিশ্বাস করতেন, কোনও মমি ধ্বংস হয়ে গেলে তার আত্মাটি ধরে রাখার জন্য এ রকম ছোট ছোট বিকল্প মূর্তি রাখা হত। নেব-সেনু সে রকমই কোনও মূর্তি বলে মনে করেন প্রাইস। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ এ ঘটনার অন্যরকম ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, পর্যটকেরা এ মূর্তির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মৃদু কম্পনের সৃষ্টি হয়। সেই কম্পনেই একটু একটু করে এ মূর্তি মুখ ঘুরিয়ে নেয়।

পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ব্রায়ান কক্সও এ যুক্তিই দিয়েছেন। ব্রায়ান মনে করেন, কম্পনের ফলে মূর্তির মসৃণ পাথর এবং কাচের মেঝেয় ঘর্ষণ তৈরি হয়। মুখ ঘুরে যায় এ মূর্তির।

তবে এই তত্ত্বের বিরোধিতা করে প্রাইসের পাল্টা প্রশ্ন, যদি কম্পনের কারণেই মূর্তি ঘোরে, তা হলে হঠাৎ করে ২০১৩ সাল থেকে এ ঘটনা শুরু হবে কেন? পাশাপাশি তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, কোনও ভাবে না বেঁকে কী করে অর্ধবৃত্তাকারে এ মূর্তিটি ঘুরে যায়? কেউই প্রাইসের কোনও প্রশ্নকেই যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করতে পারেননি। এখনও নেব-সেনুর এ রহস্য রহস্যই রয়ে গেছে। সুত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

বাংলাদেশ জার্নাল/স্বর্ণ/টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত