ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

নারীদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী টুইট করে সমালোচিত ট্রাম্প

নারীদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী টুইট করে সমালোচিত ট্রাম্প
টুইটের পর কংগ্রেস সদস্য রাশিদা ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে সমালোচনা করেছেন

বিতর্ক যেন কিছুতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পিছু ছাড়তে চাইছে না। আর এসব বিতর্কের বেশিরভাগই তিনি নিজেই তৈরি করে থাকেন। চলতি সপ্তাহে নিজের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি আবারো সমালোচিত হচ্ছেন। এবার তিনি সমালোচিত হচ্ছেন মার্কিন কংগ্রেসের কয়েকজন নারী সদস্য সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক টুইট করার জন্য। এসই টুইটের ফলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ এনেছে বিরোধী ডেমোক্র্যাট দল। বলা বাহুল্য প্রেসিডেন্ট যেসব নারীদের বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন তারা সবাই ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য।

টুইটে ট্রাম্প বলেন, ওই নারীরা এমন দেশ থেকে এসেছেন যেখানকার সরকার সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। এরপরেই তিনি নারীদের উদ্দেশ্যে লেখেন, ‘নিজেদের দেশে ফিরে যান’।

কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে চারজন ভিন্ন বর্ণের কংগ্রেস সদস্যদের কিছুটা বচসা হওয়ার পরের সপ্তাহে এমন টুইট করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

টুইটে যা বলেছেন ট্রাম্প

এক সাথে করা তিনটি টুইটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কংগ্রেসের তিন নারীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘ভয়ঙ্করভাবে’ সমালোচনা করার অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি লিখেছেন: ‘খুবই অবাক লাগে দেখতে যখন 'প্রগতিশীল' ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসের নারী সদস্যরা, যারা এমন দেশ থেকে এসেছেন যেখানে তাদের সরকার বিপর্যস্ত, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সবচেয়ে অদক্ষ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এসে এখানকার মানুষদের বলছে কীভাবে আমাদের সরকার পরিচালনা করতে হবে।’

তিনি আরো লেখেন, ‘তারা কেন তাদের নিজেদের অপরাধপ্রবণ দেশে ফিরে গিয়ে তাদের পরিস্থিতির উন্নয়ন করে না! তারপর ফিরে এসে আমাদের জানালেই পারে যে কীভাবে সে কাজ করলো তারা।’

এরপর ট্রাম্প স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত ন্যান্সি পোলোসি তাদের জন্য দ্রুত সফরের আয়োজন করতে পারলে খুশিই হবেন।’

কংগ্রেসের কোন কোন নারী সদস্যদের নিয়ে মন্তব্য করেছেন তাদের নাম উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে কাদের বিষয়ে এসব মন্তব্য করেছেন তিনি।

ধারণা করা হচ্ছে ট্রাম্প ভিন্ন বর্ণের চারজন ডেমোক্র্যাট নারী কংগ্রেস সদস্যকে ইঙ্গিত করেছিলেন যাদের তিনজনই অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। তারা হলেন: আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ, রাশিদা তায়িব ও আয়ান্না প্রেসলে। আর চতুর্থ কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর শৈশবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন।

গত এক সপ্তাহব্যপী ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে ওকাসিও কর্টেজের কিছুটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

ওকাসিও কর্টেজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন যে, সীমান্ত নিরাপত্তা বিল নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সাথে দ্বন্দ্বের সময় ভিন্ন বর্ণের নারী কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে এসব জঘণ্য টুইট করলেন ট্রাম্প।

এর কী প্রতিক্রিয়া হয়েছে?

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের অবশ্য নেতিবাচক সমালোচনাই বেশি হয়েছে। স্পিকার পেলোসি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইট সম্পর্কে লিখেছেন যে মন্তব্যটি 'জেনোফোবিক' (বিদেশিদের সম্পর্কে অহেতুক আতঙ্ক তৈরি করার প্রবণতা)।

নিজের টুইটে পেলোসি লেখেন, ‘আমাদের বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি এবং একতাই আমাদের ক্ষমতা।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ডেমোক্র্যাটরা তো বটেই, রিপাবলিকান রাজনীতিবিদদেরও অনেককেই সমালোচনা করতে দেখা গেছে।

সাবেক রিপাবলিকান শীর্ষ নেতা জন ম্যাককেইনের মেয়ে মেগ্যান ম্যাককেইন, যিনি নিজেও রিপাবলিকান সমর্থক কলামিস্ট, বলেন: ‘এই মন্তব্য বর্ণবাদী।’ তিনি বলেন, ‘এই দেশে আমরা যাদের একবার স্বাগত জানিয়েছি, তাদের আবার ফিরে যেতে বলি না।’

সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে অধিকাংশ মানুষ।

সূত্র: বিবিসি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত