ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

গরুচোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

গরুচোর সন্দেহে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

ভারতে গো-রক্ষার নামে দেশ জুড়ে তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার বিহার রাজ্যে গরু চুরি করার সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

জানা যায়,সন্দেহভাজন ওই তিন ব্যক্তি শুক্রবার সকালে লরিতে একটি মহিষ আর একটি বাছুর তোলার চেষ্টা করছিল। এ সময় বিহার রাজ্যের এক গ্রামের বাসিন্দারা তাদের আটক করে।

এরপর উত্তেজিত জনতা লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয় ওই তিনজনের উপর। বেধড়ক মারধরে ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তারা। অচেতন অবস্থায় ওই তিনজনকে ছাপরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ঘটনার খবর পাওয়ার পরই ছাপরা হাসপাতালে পৌঁছে যান নিহতের আত্মীয়রা। পুলিশকর্মীদের কাছে সুবিচার চেয়ে কান্নাকাটি করতে দেখা যায় তাদের। এক পুলিশকর্মীর পায়ে মাথা রেখে কাঁদতে দেখা যায় নিহতের এক আত্মীয়াকে।

গণপিটুনির খবর পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। ওই ঘটনায় তারা তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতেরা বানিয়াপুরের পাশের গ্রামের বাসিন্দা। নিহতের পরিজনেরা বানিয়াপুরের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। গরু চুরির অভিযোগও দায়ের হয়েছে থানায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, নিহতদের মধ্যে একজন পেশায় ব্যবসায়ী। নিহতেরা অতীতে কোনও ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ভারতে এর আগেও 'গো রক্ষকদের' দ্বারা পরিচালিত এ ধরনের হামলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং নিম্নবর্ণের হিন্দুরা নিহত হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গরুকে পবিত্র প্রাণি হিসেবে মনে করে এবং গো হত্যা সেখানে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।

হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে সমালোচকদের।

২০১৪ সাল থেকে গরুর মাংস বিক্রি বা গরু পাচারের অভিযোগে বিভিন্ন ধরণের হামলায় এবং গণপিটুনিতে বেশকিছু মানুষ নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছেন শতাধিক। তবে এসব ঘটনার মাত্র কয়েকটির ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

এসব আক্রমণের বিরুদ্ধে সরাসরি এবং দ্রুত নিন্দা জ্ঞাপন না করার কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমালোচনার শিকার হয়েছেন।

গত ২ জুলাই ত্রিপুরার ঢালাই জেলার রাইশ্যাবাড়ি গ্রামে গরুচোর সন্দেহে বুধি কুমার নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। এর আগে গত ১৮ জুন ঝাড়খণ্ডের খারসওয়া গ্রামে চোর সন্দেহে তবরেজ আনসারি (২৪) নামে এক ব্যক্তিকে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে মারধর করে এলাকাবাসী। তার আগে তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘জয় হনুমান’ স্লোগান দিতে বাধ্য করেছিল হামলাকারীরা।

সূত্র: বিবিসি/আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত