ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

জম্মু-কাশ্মীরে ছয় মাসে নিহত ১২১ বিদ্রোহী

জম্মু-কাশ্মীরে ছয় মাসে নিহত ১২১ বিদ্রোহী
এক কাশ্মীরি বিদ্রোহীর মরদেহকে ঘিরে সাধারণ মানুষের শোকের মাতম

ভারতে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে প্রতিদিনই সেখানে সেনা-বিদ্রোহী সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বলা বাহুল্য, এসব সংঘর্ষে নিহতদের সিংহভাগই কাশ্মীরি বিদ্রোহী। সম্প্রতি এক রিপোর্টে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ৬ ছয় মাসে ওই রাজ্যে ভারতীয় সেনা-পুলিশের গুলিতে ১২১ বিদ্রোহী মারা গেছে।

রিপোর্ট বলছে, গত ছ’মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত) জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে যে ১২১ জঙ্গি নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে ২১ জন পাকিস্তানি নাগরিক। বাকিরা সবাই উপত্যকার বাসিন্দা। এই জঙ্গি অভিযানগুলির বেশিরভাগই দক্ষিণ কাশ্মীরে হয়েছে। এসব অভিযানে পুলওয়ামায় ৩৬, শোপিয়ানে ৩৪ এবং অনন্তনাগে ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

মোদি সরকার বারবার কাশ্মীরি যুবকদের মূলস্রোতে ফেরার আহ্বান জানিয়ে আসলেও এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। ফলে সরকারের এই ফাঁকাবুলিতে তেমন কোনো সাড়া মেলেনি। কাশ্মীরের সাধারণ জনগণ ভারতীয় সেনাদের দখলদার বাহিনী হিসেবেই দেখে থাকে। তাই তারা এই সরকার ও তার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেই নিজেদের অধিকার ছিনিয়ে আনার পক্ষে।

আর একারণেই কাশ্মীরি যুবকদের লড়াইয়ে যোগ দেয়া অব্যাহত আছে। ওই রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গত ছ’মাসে ৭৬ জন কাশ্মীরি যুবক আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে। এদের মধ্যে ৩৯ জন যোগ দিয়েছে হিজবুল মুজাহিদিনে। ২১ জন যোগ দিয়েছে জইশ -ই-মহম্মদ সংগঠনে। জঙ্গি দলে যোগদানের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কাশ্মীরই সবচেয়ে এগিয়ে। গত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পুলওয়ামা থেকে ২০ জন, শোপিয়ান থেকে ১৫ জন এবং অনন্তনাগ এবং কুলগাম থেকে ২৬ জন স্থানীয় যুবক বিভিন্ন জঙ্গি শিবিরে যোগ দিয়েছে।

কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাদের নির্যাতন থেকে রেহাই পায় না নিরীহ সাধারণ মানুষও

এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, জঙ্গি দলে যোগ দেওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত উপত্যকায় ১০০টি নাশকতামূলক হামলা চালিয়েছে ওই নতুন বিদ্রোহীরা। এর মধ্যে পুলওয়ামায় ৩২, শোপিয়ানে ২৩, অনন্তনাগে ১৫ এবং শ্রীনগরের ১০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিরাপত্তাবাহিনীকে নিশানা করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। কখনও ছোড়া হয়েছে গ্রেনেড, কখনও পেট্রোল বোমা, কখনও আবার ঘটানো হয়েছে আইইডি বিস্ফোরণ। অস্ত্রশস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া এবং অপহরণের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

গত ছ’মাসে জম্মু-কাশ্মীরে বহু বার সাধারণ মানুষের ক্ষেভের মুখে পড়তে হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে। জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত জওয়ানদের লক্ষ্য করে ২২৮টি পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আন্দোলন হয়েছে ৩৪৬টি এবং ১০ বার বন‌্ধ ডাকা হয়েছে। তার মধ্যে ১০১টি পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে শুধুমাত্র মে মাসেই, যখন লোকসভা নির্বাচন চলছিল। ওই একই সময়ে, জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৭১ জন জওয়ান প্রাণ হারান। আহত হন ১১৫ জন।

ভারতের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরি জনগণের বিক্ষোভ

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত