ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছেলে নোবেল পাওয়ায় খুশি অভিজিতের মা

  কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৫৯  
আপডেট :
 ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ১১:২২

ছেলে নোবেল পাওয়ায় খুশি অভিজিতের মা

তৃতীয় বাঙালি হিসাবে নোবেল জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জির মা নির্মলা ব্যনার্জি। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার বালিগঞ্জের বাড়িতে বসে ছেলের এই কৃতিত্বের খবর পেয়েই আনন্দে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি।

ছেলের গর্বে গরবিনী মা নির্মলা ব্যানার্জি জানান, ‘মধ্যাহ্নভোজনের পর আমি তখন বই পড়ছিলাম, সেসময়ই দুপুর আড়াইটা নাগাদ খবরটা পেলাম। আমার ছোট ছেলেই আমাকে খবরটা প্রথম জানায়। এটা সত্যিই অপ্রত্যাশিত। একজন নোবেল জয়ীর মা হিসাবে যেমন গর্ব হওয়া উচিত ঠিক তেমনটাই লাগছে আমার।’

নির্মলা ব্যানার্জি বলেন, খবর পেয়েই তিনি অভিজিৎকে ফোন করেন। কিন্ত তখন তিনি মায়ের ফোন ধরতে পারেননি। পরে অবশ্য ফোন করে ছেলে অভিজিৎ মায়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণেই মা ছেলের ফোনালাপ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

নির্মলা জানান, গত তিন বছর আগে ছেলের সাথে তার দেখা হয়, তবে ফোনে যোগাযোগ রয়েছে। ভারতের কর কাঠামো নিয়েও ছেলের সাথে কথা হয়।

জানালেন, ‘ছেলেই আমাকে বলেছে যে গত কয়েক বছর ধরে দারিদ্র দূরীকরণে বিভিন্ন বিশ্লেষণ করছেন। তার গবেষণা এমনকি বিভিন্ন বক্তৃতাতেও গরিবদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়গুলি উঠে এসেছে।’

উল্লেখ্য, বিশ্ব দারিদ্র দূরীকরণে পরীক্ষামূলক বিশ্লেষণের জন্যই এবার অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন তিনি। তার সাথে আরও দুইজন অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন। তারা হলেন অভিজিতের স্ত্রী এস্থার ডাফলো এবং মাইকেল ক্রেমার। সেই অর্থে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েই একসাথে নোবেল পেলেন, যা এককথায় বিরল ঘটনা।

জানা যায়, কলকাতার সাউথ পয়েন্ট থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে বিএসসি পাশ করেন অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি। পরে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্রস করেন এবং ১৯৯৮ সালে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন তিনি।

ছেলের ছোটবেলার কথা প্রসঙ্গে মা নির্মলা বলেন, ‘আমার স্বামী দীপক ব্যানার্জি প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন, তার সাথেই অভিজিৎ কলেজে গিয়ে ক্লাসে যোগ দিতেন। বয়সে ছোট থাকলেও অর্থনীতির ওপর তার ভীষণ ঝোঁক ছিল। দ্বাদশ শ্রেণি পরীক্ষার পর (আমাদের এইচএসসি) প্রথমে রসায়ন নিয়ে ভর্তি হলেও পরে সেটি পরিবর্তন করে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে অভিজিৎ।

এদিকে অভিজিৎ ব্যানার্জির নোবেল জয়ের ঘটনায় গোটা পশ্চিমবঙ্গবাসীই গর্বিত। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেই তাকে শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের তরফে শুভেচ্ছা বার্তা হিসাবে মিষ্টি দেওয়া হয় নির্মলা ব্যনার্জির হাতে।

শুভেচ্ছা জানিয়ে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার দেবজ্যোতি কোনার জানান, আনন্দে আামদের চোখের পানি ধরে রাখা কঠিন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা পরিবারই আজ আনন্দিত। এই গৌরব গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের। একই সঙ্গে তিনি বাংলা ও ভারতের গৌরব।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও টুইট করে তাকে শুভেচছা জানিয়েছেন। টুইটে তিনি লেখেন, অর্থনীতিতে নোজেল জয়ের জন্য কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুল ও প্রেসিডেন্সি কলেজের সাবেক ছাত্র অভিজিৎ ব্যনার্জিকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের আরেকজন বাঙালি জাতিকে গর্বিত করেছে।

অভিজিৎ ব্যানার্জি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত