ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

মানসিক চাপ থেকে হতে পারে ত্বকের সমস্যা

মানসিক চাপ থেকে হতে পারে ত্বকের সমস্যা
প্রতীকী ছবি

আমাদের প্রতিদিনকার ব্যস্ত জীবনে মানসিক চাপ এড়িয়ে চলা একেবারে অসম্ভব ব্যাপার। এর শুরু হয় হয়তো মন দিয়ে, কিন্তু প্রভাবটা পড়ে পুরো শরীর জুড়ে। মানসিক চাপ মূলত তিন ধরনের - শারীরিক চাপ, ইমোশনাল চাপ আরেকটি হলো পারিপার্শ্বিক চাপ।

পারিবারিক সমস্যা সংক্রান্ত নানা চাপ সামলে নেয়া অনেকটা সহজ তবে, আসল সমস্যাটি শুরু হয় এই চাপ ক্রনিক হয়ে উঠলে। দীর্ঘস্থায়ী চাপ আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতা, পাচনতন্ত্র, বিপাক এবং হরমোনকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। পাশাপাশি এটি স্থূলত্ব, হার্টের সমস্যা, আলঝাইমারস, ডায়াবেটিস, হতাশা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা এবং হাঁপানির মতো রোগের মূল কারণ হিসেবেও কাজ করতে পারে।

ত্বকের উপর প্রভাব

মানসিক চাপের ফলে আমাদের ত্বকে নতুন করে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে, আবার দেখা গেছে কিছু ক্ষেত্রে পুরনো সমস্যাগুলোও বেড়ে যায়। প্রথমেই বলা প্রয়োজন ব্রণ ও অ্যাকনের কথা। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের পরীক্ষার আগে বা পিরিয়ডসের আগে ব্রণ হয়। অনেকের আবার আগে কোনওদিন ব্রণ না হলেও, চল্লিশের পরে হয়তো ব্রণ হলো। এঁদের সাধারণত ব্রণ হয় হরমোনাল ইমব্যালেন্সের জন্যই । রোজেশিয়া, সোরিয়াসিস, অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস, এগজিমাও স্ট্রেস থেকে হতে পারে। মানসিক চাপ থেকে ইমিউনিটি কমে গেলে ত্বকে কোনও ইনফেকশন হলে সারতে চায় না। অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিসের ক্ষেত্রে অনেকগুলো কারণই দায়ী। তার মধ্যে মনিসিক চাপ অন্যতম।

ত্বক লাল হয়ে যায়, চুলকোয়। ত্বকের যেসব জায়গায় বেশি ঘাম হয়, সেই অংশগুলোয় এই অসুখ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আবার সোরিয়াসিসের ফলে ত্বকে ছোট ছোট লাল প্যাচ হতে পারে। কনুই, হাঁটু, লোয়ার ব্যাক যে কোনও অংশেই এগুলো হতে পারে। আবার স্ট্রেসের ফলে অনেকেই খুব দ্রুত বুড়িয়ে যান। শরীরে থাকা কোলাজেন (যা ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে) ভেঙে গিয়ে বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়ে যায়। ফলে, দ্রুত ত্বক কুঁচকে যায়, গালের পাশে ভাঁজ পড়ে, ডবল চিন হতে পারে বা চোখের তলায় কালি পড়তে পারে। স্ট্রেসের ফলে ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

মানসিক চাপ ও এজিং

ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে যাওয়া, চামড়া শিথিল হয়ে কুঁচকে যাওয়া, আন্ডার আই ব্যাগস ইত্যাদি অকাল-বার্ধক্যের লক্ষণ। পিগমেন্টেশন বা ডার্ক স্পটসও টেনশন থেকে হতে পারে। যদি আপনি কোনও বিষয় নিয়ে অত্যধিক চাপে থাকেন, তাহলে আপনার ত্বকে সেই ছাপ ফুটে উঠবে। অনেক ক্ষেত্রে ত্বকের রংও কালচে হয়ে যায়।

সমাধান

নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। ভালো কোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ময়শ্চারাইজার, ফেসওয়াশ বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। নিজের স্কিন টাইপ বুঝে সেই অনুযায়ী প্রডাক্ট বেছে নেওয়া প্রয়োজন। অবশ্যই বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। যাঁদের অ্যাকিউট স্ট্রেস আছে, তাঁদের প্রয়োজনে কাউন্সেলিংও করানো হতে পারে। কম বয়সে ব্রণ, অ্যাকনেতে ভুগলেও অনেকের কাছে তা স্ট্রেসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে একইসঙ্গে মানসিক চাপ কমানোর জন্য সঠিক জীবনযাত্রা মেনে চলা জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম, ব্যালেন্সড ডায়েট আর নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন।

ডায়েটে প্রচুর ফল আর সবজি রাখুন। মেডিটেশন স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। ত্বক আর্দ্র রাখার জন্য জল খান প্রচুর পরিমাণে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ঘুম। আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য এবং স্ট্রেসের স্তরটি পরিচালনা করতে ৭-৮ ঘণ্টা একটি ভালো মানের ঘুম গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপ কমানোর অন্যতম সেরা উপায় হলো যোগ বা ধ্যানের অনুশীলন। ত্বকের কোনও অসুখের জন্য ডাক্তারের পরামর্শে অনুরূপ চিকিৎসা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত