ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

রুদ্রাক্ষ রায়হানের একগুচ্ছ কবিতা

  শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক

প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২০, ২১:৫৮

রুদ্রাক্ষ রায়হানের একগুচ্ছ কবিতা

(দোকান)

শীতার্ত রাত্রিরা পিদিমের পিঠ ছুঁয়ে ওম নিতে যায়

অস্থির সময়েরা ফিরে গেলে পুরোনো শহরে

মানুষেরা রাত জাগে, রাত্তিরে শহর ঘুমায়।

তখনো সরল চিন্তাকে ভুল জেনেছিলাম

ক্লান্তির ব্যারিয়ারে আটকানো জীবন

অহেতুক সূর্যকে তাড়া দিতো, অস্তাচলে যাও

আমিও কাতর স্বরে জপি সেই শ্লোক

ওহে রাত, প্রাণপণে আঁধার নামাও

তারপর আড্ডারা জমে ওঠে ফ্রি'স্কুল স্ট্রিটের পাশে

অভিজাত আতরের ঘ্রাণে, কেউ ফেরে রাতের আকাশে

কে গায় অবিরাম, অদ্ভুত নেশাক্রান্ত গান?

শহরে ব্রথেল মানে ইলিশের খুচরো দোকান।

(হরিণী গন্ধের বনে)

ভোর হলো খুলে রেখো দরোজা কবাট

ভিতরের সুশোভিত মাঠ

ঘাসের আদর ছেড়ে অদূরের নদী

ঢেউ এলোমেলো

ভোর হলো ভোর হয়ে এলো।

অমোঘ মৃত্যুর মতো দিন

নরকের জ্বালামুখে দাঁড়িয়ে রয়েছি নির্বিকার

ভোর হলো খুলে দাও ঘর।

পলাতক রাতের আঁধার

শহুরে শরীরজুড়ে বিদঘুটে জিঘাংসার দাগ

বিছানা পেতেছে কেউ কেউ।

সবকিছু ছেড়ে ছুঁড় অরণ্যের পথে ফিরে যাই

ঘুম ভেঙে যায়, হরিণী গন্ধের বনে-

কেউ নাই, কেউ কেউ নাই।

(নিরাপত্তা)

একটি বাঘ লোকালয়ে ঢুকে যাওয়ার পরে মানুষের তাড়া খেয়ে মগডালে উঠেছে।

আসলে বাঘ নয়, ওটা চিতা ছিলো।

খবরের সত্যতায় ছুটে আসলেন পশু অধিকার কর্মী, বন বিভাগের লোক। আর এক পাল গবেষক।

বলে গেলেন, বাঘের কোন দোষ নেই শিকারীদের হাতে হরিণেরা নাই হয়ে যাওয়ায় বাঘকে লোকালয়ে আসতে হয়েছে।

এরপর আরো অনেক কথা। পৃথিবীতে বাঘের গুরুত্ব, বাঘের বৈজ্ঞানিক নাম। বাঘ ও চিতার পার্থক্য। খাদ্যাভাব, চোরা কারবারি, পরিবেশ বিপর্যয়, আরো কত কি!

হরিণের প্রসঙ্গটা কিন্তু ওই নাই হওয়া পর্যন্তই ছিলো।

বাঘটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দিতে হবে শীঘ্রই

জঙ্গলে বাঘেরা নিরাপদ।

জ্বি হ্যা, বাঘকে জঙ্গলেই ছেড়ে দিতে হয়

বাঘেরা জঙ্গলে নিরাপদ

হরিণেরা কোত্থাও না।

(দৈনিক সুখ সংবাদ- ১১)

কি খোঁজো অসুখ জমা শরীরের ঘ্রাণে?

নেমেছে নরম আলো সুবেহ-সাদিক।

কোমল কাঁথার কথা কেউ শুনিয়েছে?

দেখেছো জলজ নাও, সাঁতারু নাবিক?

তবে তার সাথে আর প্রেম হোলো কই?

আদরের জলকেলি বাবু রাজহাঁস

পৃথুলা শরীর ছুঁয়ে সাঁতরায় জলে

পাখিদের ঘরদোর পাশাপাশি বাড়ি

কে কবে বেঁধেছে কারে কেমন শেকলে

বেঁধেই রাখলে যদি প্রেম হোলো কই?

গহীনে গড়াও নারী তুমুল স্বভাবে

ঠোঁটের অবাধ্য ঠোঁট কতদিন রবে?

নোঙ্গর হারিয়ে যারা খুঁজে ফেরে থই

কখনোই আমি তার দলগত নই।

(দৈনিক সুখ সংবাদ-১৪)

চোখের অসুখে ভোগো মনের ব্যাধিতে

ফুটেছে ক্লান্তির ফুল মূক সমাধিতে

আঁধার নিটকে রেখো অমানিশা রাত

পথ শেষ হলে ছোঁও কফিনের হাত

ভীষণ ব্যাথিত গাঁথা পুরাণেও আছে।

মাছেরা সাঁতার দেয়া কোথায় শিখেছে?

এমনও প্রশ্ন এলে, কি জবাব থাকে?

কত কিউসেক জল মোহনার বাঁকে?

ভালোবাসা বলে কিছু প্রকৃতই আছে?

অবেলায় ফোঁটে ফুল হিজলের গাছে।

সবকিছু জলে ধুয়ে মুছে পুরাতন

কতটুকু সোনা দিলে কতটুকু খাদ?

আহত রানার জানে কাঁদে অগণন

ব্যথাদের ডাকঘরে সুখ সংবাদ

প্রকাশক: জলধি

প্রচ্ছদ: আল নোমান

প্রকাশ: অমর একুশে বইমেলা-২০২১

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত