ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

বঙ্গমাতার সংসারের জমানো টাকা খরচ হতো আন্দোলনে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২০, ০৯:৫০

বঙ্গমাতার সংসারের জমানো টাকা খরচ হতো আন্দোলনে

বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী হিসেবে নয় একজন নীরব দক্ষ সংগঠক হিসেবে যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে হিমালয় সমআসনে অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, এই কথাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ওয়েবিনারে।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার ৮ আগস্ট রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ‘গৃহকোণ থেকে জনগণের হৃদয়ে’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর সহযোগিতায় আয়োজিত হয় এই ওয়েবিনার।

সাবেক ছাত্র নেতা ও কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায়-এর সঞ্চালনায় এখানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ- এর উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমীর হোসেন আমু, আওয়ামী লীগ-এর মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু আলোচনার শুরুতে বঙ্গমাতাকে বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিহত হওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করে শোক ও শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কোন পিছুটান ছিলো না বলেই বঙ্গবন্ধু দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যেতে পেরেছিলেন, আর বঙ্গবন্ধুর এই চলার পথকে মসৃন করেছিলেন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা শেখ মুজিব। বেগম মুজিবের মধ্যে কিছু ঐশ্বরিক ক্ষমতা থাকতে পারে নয়ত যে বয়সে ছেলেমেয়েদের বাবা-মার কাছে আবদার থাকে সে বয়সেও বেগম মুজিব বায়না না করে বঙ্গবন্ধুর হাতে তার জমানো টাকা তুলে দিতেন যাতে বঙ্গবন্ধুর কলকাতাতে কষ্ট না হয়। এই যে তার ত্যাগ, সেই ত্যাগের বিনিময়েই বঙ্গবন্ধুর কিন্তু বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠা। বঙ্গবন্ধুর জীবনে সবচেয়ে বড় আশির্বাদ হিসেবে বেগম মুজিব এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে যেভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন, মূল্যায়ন করেছিলেন তা তার লেখনির মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে।’

বঙ্গমাতার সাথে তার নিজের অনেক ঘটনার উল্লেখ করে আমু বলেন, ‘আমরা যারা ছাত্র রাজনীতি করতাম আমরা সবচেয়ে বেশি তার সান্নিধ্য পেয়েছি, বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি আমাদের সাহস যুগিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। এমনকি ঈদ করার টাকাও আমাদের দিয়েছিলেন ছাত্র আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের সাথে দেখা করতেন গোপনে, ধানমন্ডিতে দুটি বাসায় আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো, এই দুটি বাসায় তিনি দেখা করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা পৌছে দিতেন। তার জমানো টাকা পরিবারের পেছনে খরচ না করে আমাদের মত ছাত্রনেতাদের দিতেন আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে নেয়ার জন্য। তিনি ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন একজন মানুষ। আমি বঙ্গমাতার জন্মদিনে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’

আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি আলোচনার শুরুতে ১৫ আগস্টের নীহত সকলের কথা স্বরন করেন। আলোচনা কালে তিনি বঙ্গমাতার জীবনী নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো বঙ্গমাতাকে দেখার, বাবার সাথে ৩২ নাম্বার বাড়ি গিয়েছিলাম একবার। তাকে দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম, এত বড় একজন মানুষের স্ত্রী এত সাধারণ হবে আমার ধারনাই ছিলো না। পরবর্তীতে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছ থেকে বঙ্গমাতাকে নিয়ে আমার জানার আরো সুযোগ হয়- তার মধ্যে আদর্শ ছিলো, মানবতা ছিলো, দেশপ্রেম ছিলো বলেই বঙ্গবন্ধুর চলার পথে কখনও বাধা হননি তিনি, বরং হয়েছেন চলার পথের শক্তি, হয়েছেন প্রেরণা।’

বঙ্গমাতার জীবনী থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বলেও আলোচনায় উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ এই নেত্রী।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত