ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

সরকারকে ডা. জাফরুল্লাহর অনুরোধ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ২২:০২

সরকারকে ডা. জাফরুল্লাহর অনুরোধ
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

ড. বিজন কুমার শীলের মতো মানুষের প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে তাকে অবিলম্বে ভিসা প্রদানের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভয়াবহতার প্রেক্ষাপটে করণীয় বিষয়ে আয়োজিত এক নাগরিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, সবে মাত্র মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষায় ৫০ হাজারের মত পাশ করেছে। তারা ১০ হাজার ভর্তি করছেন। এটা হওয়া উচিৎ ছিলো ২০ হাজার। তাদের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে ফিজিক্স-ক্যামেস্ট্রিতে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বোঝে কি না সে বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়নি।

‘সমাজের শ্রেণি বোঝে কি না? সমাজের জন্য দরদ আছে কি না? সাধারণ মানুষের জন্য তার বিবেক কাঁদে কি না? এই সবের কোনো কিছুই পরীক্ষায় ছিলো না। আমরা তাদের ডাক্তার বানাচ্ছি ঠিকই, কিন্তু মানুষ বানাচ্ছি না।’

এসময় সকল ওষুধের দাম সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বানও জানান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, একটা আইসিইউতে প্রতিদিনের খরচ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা। এজন্য চিকিৎসা করাতে গিয়ে একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। একটি সিরিঞ্জের সুইয়ের ট্যাক্সও ৩১ শতাংশ। এই জিনিসগুলো পরিবর্তন করতে হবে। সকল ওষুধের মূল্য সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাহলে ওষুধের দাম বর্তমান দামের তুলনায় এক তৃতীয়াংশে আনা সম্ভব। অক্সিজেনের উপরেও ভ্যাট ১৯ শতাংশ।

‘এটা সরকারের ব্যর্থতা। সরকার নির্দিষ্ট বিষয়ে অজ্ঞ লোক দিয়ে সব কিছু চালাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

করোনা জাতীয় জীবনে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে মন্তব্য করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, করোনায় একজন মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু পুরো পরিবারকে হত্যা করছে সরকার। কারণ সরকার কোনো কিছুর পরোয়া করে না।

‘ভারতীয় কোম্পানি সময় মত দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাঠাচ্ছে না। কারণ তাদেরও চাহিদা বেশি। এই জন্য সরকারকে নিজ দেশে উৎপাদনে যেতে বলেছিলাম।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকারের আগাম প্রস্তুতির অভাব ছিল শুরু থেকেই। এমন কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও প্রস্তুতির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে অনুন্নত দেশও সফল হয়েছে। করোনার সংক্রমণকে অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বশক্তি নিয়োগ করলে প্রথমেই এটাকে মোকাবেলা করা সম্ভব হতো। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে ৪৯ দিনের একটি লকডাউনের মাধ্যমে সংক্রমণকে একদম নিম্ন পর্যায়ে আনা যেতো। সেক্ষেত্রে সরকারকে আড়াই কোটি পরিবারের জীবিকা নিশ্চিত করতে হতো, যার সামর্থ আমাদের ছিল। শুধুমাত্র ভুল পদক্ষেপের কারণে সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততোদিন এই সত্য মানতে হবে যে, শুধুমাত্র ভিন্ন মতের কারণে সরকার গণস্বাস্থ্যের কিটকে অনুমোদন দেয়নি। টিকা নিতে গিয়ে মানুষ প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে। টিকা আমরা এক্সেপ্ট করি কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী টিকা আসছে না!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, পরিকল্পনাবিহীন লকডাউন দিয়ে সরকার করোনাকে আরো বিকেন্দ্রীকরণ করে দিয়েছে। লোকজন বাড়ি গিয়ে আরো বেশি মানুষকে আক্রান্ত করছে। সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই বলে সরকার যা ইচ্ছা তাই করছে।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু গণস্বাস্থ্যের কিটের জরুরি অনুমোদন দেওয়া ও কিট বিজ্ঞানী ডা. বিজন কুমার শীলের দেশে ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান। করোনার এই মহামারি থেকে উত্তরণের জন্য সব স্তরের নাগরিকদের নিয়ে সরকারকে জরুরি একটি সর্বদলীয় নাগরিক কমিটি গঠনের পরামর্শও দেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্র চিন্তার দিদারুল ভুঁইয়া, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, পানি বিশেষজ্ঞ ম ইনামুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান। জুমে বক্তব্য দেন বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা অ্যাডভোকেট রিজওনা হাসান।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত