ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

লকডাউনের উস্কানিতে সরকার পতন চায় হেফাজত

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৫:০৯

লকডাউনের উস্কানিতে সরকার পতন চায় হেফাজত
সংগৃহীত ছবি

লকডাউনের উস্কানি দিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজত সরকারের পতন ঘটাতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩টি ইসলামী দল। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সরকারপন্থি ১৩টি সমমনা ইসলামী দলের আয়োজনে এক মানববন্ধনে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, লকডাউনের পক্ষে বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের কথা প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র। বিএনপি-জামায়াত এবং মুনাফেক কওমি মাওলানা গোষ্ঠী ও ধর্ম ব্যবসায়ী মাওলানাদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে অবিলম্বে আত্মঘাতী লকডাউন তুলে দিতে হবে। লকডাউন কোনও সমাধান না। লকডাউন দিয়ে দেশের অর্থনীতি ও জনগণের ক্ষতির কোনও মানে হয় না। লকডাউন দিয়ে কোনও সমাধানে পৌঁছানো যাবে না।

বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত লকডাউনের নামে দেশের মানুষকে না খাইয়ে মারার পক্ষে, এমন মন্তব্য করে মানববন্ধনে নেতারা বলেন, তারা দেশে ৭৪-এর মত দুর্ভিক্ষ তৈরি করতে চায়। মসজিদে জমায়েত, তারাবীহ, ইফতারি বন্ধ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে চায়। সর্বোপরি লকডাউনের মাধ্যমে দেশে মহা অস্থিতিশীল পরিবেশ, অরাজকতা তথা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের পতন ঘটাতে মরিয়া বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজত।

বক্তারা বলেন, লকডাউনের বিরুদ্ধে সারা দেশের মানুষ ক্ষেপে ওঠেছে। কারণ লকডাউনে তারা না খেয়ে মরছে। বাংলাদেশের দোকান মালিক সমিতির নিজস্ব হিসাবে সারা দেশে গত বছরের লকডাউনে ৫৩ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের দৈনিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। এদের প্রত্যেকের পুঁজির পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা। গত বছর করোনায় লকডাউনে তারা সব পুঁজি নষ্ট করেছে। গেলবার এই ক্ষুদ্র ব্যবসা খাতের উদ্যোক্তারা কোনো প্রণোদনা পায়নি। এবারও পাবে না। দেশের মানুষ লকডাউনের বিরুদ্ধে।

তারা আরো বলেন, প্রতিদিন লকডাউনে দেশের ক্ষতি হয় ৫ হাজার কোটি টাকা। রপ্তানি সংশ্লিষ্ট খাত সব ধ্বংস হয়ে যায়। কাজেই জনগণ ও দেশের স্বার্থবিরোধী লকডাউন এখনই উঠিয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে লকডাউন পালন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর জনগণের আক্রমণের খবরও পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। ফরিদপুরে থানা ও সরকারি স্থাপনায় ‘উত্তেজিত জনতার আগুন’ এরই নমুনা।

বক্তারা বলেন, লকডাউনে অতিষ্ঠ হয়ে এভাবে সাধারণ মুসলমানকে বিভ্রান্ত করে বিএনপি জামাত হেফাজত দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করার বিশেষ সুযোগ নিবে। কাজেই সরকারকে সতর্ক হয়ে লকডাউন প্রত্যাহার করতে হবে।

নেতারা বলেন, পবিত্র রমজান মাসে অনেক ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ ও গরীব মুসলমান মসজিদে আয়োজিত ইফতারে শরীক হয়। এবার মসজিদে ইফতারি বন্ধ করলে তারা সারা দিন রোজা রাখার পরও ইফতারি পাবে না।

বক্তারা বলেন, সারা দেশে লাখ লাখ হাফেজ রয়েছে খতমে তারাহিহ পড়িয়ে তাদের সারা বছর চলে। পাশাপাশি সাধারণ মুসলমান মসজিদে খতমে তারাবীহ পড়ার মাধ্যমে পবিত্র কুরআন শরিফ তিলাওয়াত শুনে থাকে। কিন্তু লকডাউনের নামে তা বন্ধ করলে সাধারণ মুসলমানের দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত হানবে। বর্তমান সরকারকে ইসলাম বিরোধী ও বিদ্বেষী প্রচার করতে বিএনপি, হেফাজত, জামাত-শিবির সুযোগ নিবে।

বক্তারা বলেন, বিএনপি জামায়াতের সুরে সুর মিলিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক দুর্নীতিবাজ ডিজির আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বর্তমান জামাতী মাওলানা, মুফতি, মুহাদ্দিস, মুনাফেক কওমি মালানা এবং ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা করোনাকে ছোঁয়াচে ও মহামারী বলে ফতোয়া দিয়েছে এবং সরকারকে লকডাউন ঘোষণা করতে বাধ্য করেছে। অথচ খোদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফের বাংলা অনুবাদে উল্লেখ আছে ‘সংক্রমণ বা ছোঁয়াচে রোগ বলতে যে কোন কিছু নেই’।

তারা আরো বলেন, মসজিদে মাস্ক পড়ে যেতে হবে এ কথার অর্থ হলো মসজিদে গেলে করোনা হয়। মসজিদে গেলে মাস্ক পড়ে যেতে হবে একথা দ্বারা মুসল্লিদের মনে মসজিদ সম্পর্কে করোনা আতঙ্ক তৈরি করে দেয়া হয়। অথচ মসজিদ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। যেখানে অবারিত রহমত নাযিল হয়। তাই মসজিদে গেলে উল্টো করোনা সেরে যায়। সারা বিশ্বে ঢাকা মসজিদের শহর হিসেবে সুবিখ্যাত। কাজেই মসজিদ সম্পর্কে মিথ্যা আতঙ্ক তৈরি করা যাবে না। মসজিদে প্রবেশে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা যাবে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ে অধর্ম তথা অনৈসলামিক ফতোয়া অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

মানববন্ধনে সমন্বয় করেন বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি আলহাজ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী। বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি আলহাজ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, আওয়ামী ওলামা লীগের সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহাম্মাদ মোস্তফা হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত