ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

নেতাকর্মীদের রাস্তায় নামার আহ্বান ফখরুলের

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ২১:১৯  
আপডেট :
 ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ২১:৩৫

নেতাকর্মীদের রাস্তায় নামার আহ্বান ফখরুলের
ফাইল ছবি

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তার নামার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে’ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সভার নির্ধারিত সময় বিকেল ৩টায় আগেই উপস্থিত হলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনুমতি না থাকায় তারা নাট্যমঞ্চের ভেতরে ঢুকতে পারেনি। পরে অনুমতি পেলে বিকেল চারটার দিকে নেতাকর্মীরা নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে প্রবেশ করে। এরপর সাড়ে ৪টার দিকে সভা শুরু হয়।

সভাপতির বক্তব্যে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কারণ কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তিকে এককভাবে পরাজিত করা যায় না। তাই দেশপ্রেমিক সব শক্তিকে এক জায়গায় আনতে হবে। আমরা সেই লক্ষেই যাচ্ছি। আমরা মনে করি সব দেশ প্রেমিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে একনায়ক ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর রাষ্টে পরিণত করতে চায়। তারা রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দিচ্ছে। তারা মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা মানুষের সুশাসন থেকে বঞ্চিত করেছে। নিজেদের দুর্নীতি এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, তা ঢাকার জন্য চুনোপুটিগুলোকে ধরা হচ্ছে। একটা কথা পরিস্কার করে বলতে চাই, এই চুনোপুটি ধরে ক্যাসিনোর গল্প বানিয়ে মহা দুর্নীতি থেকে জনগনের দৃষ্টিকে আলাদা করতে পারবেন না।

সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছেন। তার হিসেব কোথায়? ব্যাংক, শোয়ারবাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছেন তার হিসেব কোথায়? তার হিসেব থাকবে না। এজন্য যে, লুটের সঙ্গে জড়িত কেউ মন্ত্রী, কেউ উপদেষ্ঠা, আবার কেউ আপনজন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকারে আছেন, তারা বলেন ৭ নভেম্বর মানি না। মানবেন কেনো? দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌম বিশ্বাস করেন না বলেই মানেন না। আজকে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে, যারা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, তারা অবশ্য ৭ই নভেম্বরকে মান্য করবে। কারণ ওইদিন ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়েছিলাম। সেদিন জনগন বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশপ্রমিক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বের করে নিয়ে এসে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ অকার্যকর রাষ্ট্র পরিণত হয়নি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের দানব সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। আর রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র প্রয়োজন। আর গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়াকে মুক্তি করা ছাড়া গণতন্ত্র আসবে না। এই সরকারের পতন হবে না।

দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারিনি, ব্যর্থ হয়েছি। তবে সময় এসে গেছে। আর বেশি সময় আমাদের হাতে নেই। আমরা যদি দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে কঠোর কোনো কর্মসূচি দেই, আপনাদের রাজপথে নামতে হবে। আমরা যারা আছি তারা রাজপথে থাকব।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জেল তো আমাদের হবেই। জেলে যেতে হয় যাই, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই যাই। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করুন। তাহলে দেশের মানুষ মুক্তি পাবে। নেত্রী মুক্তি পাবে। সে কারণেই বলছি- আদালত নয়, রাজপথে ফয়সালা হবে খালেদা জিয়ার। তাই যাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে তারা চলে যাক, তাদের নিয়ে আমাদের সময় কাটানো দরকার নেই। কিন্তু আমরা যারা আছি তাদের মধ্যে কোনো মোনাফিকের ভাব আছে কিনা, আমরা সঠিকভাবে রাজপথে নামতে চাই কি না, আগে সেটা দেখে আন্দোলনের ডাক দেন। তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবেই।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে/কেএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত