বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ গৃহবন্দি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২০, ১৭:১২ আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২০, ১৭:১৩
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস বিশ্বের প্রায় সব দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও মুক্ত নয়। এ অবস্থায় সংক্রমণ রোধের প্রধান উপায় হিসেবে সঙ্গরোধ বা হোম কোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক দেশ লকডাউন, জরুরি অবস্থাসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে মানুষ তাদের ঘরে বন্দিদশায় দিন কাটাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সম্পূর্ণ ‘লকডাউন’ হয়েছে ভারত। দেশটির প্রায় ১৩০ কোটি মানুষ আগামী ২১ দিন ঘরবন্দি থাকবেন। জরুরি ও অত্যাবশকীয় প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া যাবে না। গোটা ভারতকে লকডাউন ঘোষণার পর একদফায় বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ গৃহবন্দি।
বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় সোয়া চার লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থও হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের মতো মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। অঘোষিত লকডাউনের দিকেই এগোচ্ছে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া ও ফ্লোরিডাসহ অন্যান্য রাজ্যগুলো।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে লকডাউনের পরিস্থিতি এখনো আসেনি। তিনি এও আশা করছেন যে, লকডাউন করার পরিস্থিতি আসবে না। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ইউরোপের পর করোনার নতুন প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল হবে আমেরিকা। এখন সময় বলবে, ভাইরাসটির গতিপথ কোথায়।
করোনায় এখন ইউরোপের অবস্থা সবচেয়ে নাজেহাল। মহাদেশটির অন্যতম উন্নত দেশ ইতালি তো বিপর্যস্ত। প্রতিদিন শত শত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে সেখানে। স্পেনের অবস্থাও বেশ নাজুক। ফ্রান্স আর জার্মানির মতো দেশগুলোতেও পাল্লা দিয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। দেশ দুটি এখন লকডাউন।
গোটা বিশ্বে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ এখন গৃহবন্দী। লকডাউন পরিস্থিতিতে ইউরোপ তথা বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। শুধু ইতালিতেই মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ছুঁই ছুঁই। গতকাল দেশটিতে ৭৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বের মোট মৃত্যুর ৩৬ শতাংশই সেখানে। ইতালিতে আক্রান্ত ৯ জনের একজন মারা যাচ্ছেন।
তবে ভাইরাসটির উৎপত্তি হয়েছিল যেখানে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেই চীনের জয় হয়েছে বলা যায়। করোনা মোকাবিলা করে কিছুটা হলেও ছন্দে ফিরছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির এই দেশটি। তবে গতকাল দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, হান্টা নামে একটি নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে সেখানে।
ইরানে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় দুই সহস্রাধিক মানুষের। বুধবার লকডাউনের মেয়াদ দুই সপ্তাহ বৃদ্ধি করেছে মালয়েশিয়া। নেপালও লকডাউন। ভাইরাসটি থেকে রেহাই পায়নি আফ্রিকাও। মহাদেশটির বেশ কিছু দেশে করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে আশঙ্কাজন হারে।
ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও স্পেন সম্পূর্ণ লকডাউন। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ অঙ্গরাজ্য সরকার ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বাসিন্দাদের। জার্মানির কিছু এলাকাও লকডাউন করা হয়েছে। লকডাউন করা হয়েছে নিউজিল্যান্ড। সেখানে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। বন্ধ হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় বন্ডি সৈকত।
জোটের বাইরের দেশের জন্য সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে ইইউ। নিজেদের সীমান্ত সিল করে কিউবা ও বলিভিয়া। ব্রাজিলেও ভালোই ছোবল মেরেছে করোনা। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। সৌদিতেও চলছে জরুরি অবস্থা।