ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

৭ই মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি উদযাপন শনিবার

সাজবে জেলা উপজেলা, রাজধানীতে শোডাউন

  শামীম সিদ্দিকী

প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ০০:১৬  
আপডেট :
 ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ০০:৪৪

সাজবে জেলা উপজেলা, রাজধানীতে শোডাউন

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক কমিটির ব্যানারে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বড় শো ডাউন করবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে আগামী ১৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসমুদ্রে পরিণত করতে চায় আওয়ামী লীগ। নাগরিক সমাবেশের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের উপর বিশদ আলোচনার জন্যই বড় সমাবেশ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এটি কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ না হলেও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমাগম করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। সমাবেশে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বিষয় নিয়েই শিক্ষক বুদ্ধিজীবী ইতিহাসবিদরা বক্তব্য দিবেন। নতুন প্রজন্মের সামনে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরতেই মুলত এ আয়োজন।

সূত্র জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনতার ঢেউ সারাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় গিয়েও পড়বে। সাজানো হচ্ছে জেলা উপজেলা শহর। সোহরাওয়ার্দী সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ১৮ নভেম্বরের সমাবেশের মাধ্যমে কয়েক মাস পর প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ দিতে যাচ্ছেন। তবে গত বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির অস্তিত্ব, বাঙালি জাতির ইতিহাস। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা জানান, সোহরাওয়াদী উদ্যান একটি ঐতিহাসিক স্থান। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এখান থেকেই দিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণটিই বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতেই এ নাগরিক সমাবেশ। এটি কোনো রাজনৈতিক প্রতিযোগীতার সমাবেশ নয়। তবে এ সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বার্তা দিতে পারেন। একই আয়োজন সারাদেশেই চলবে।

এদিকে বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে ঢাকার প্রতিটি নির্বাচনী এলাকাসহ প্রধান প্রধান সড়কের পাশে টাঙানো ব্যানার-পোস্টারে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের কথা। তাতে লেখা রয়েছে- ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’।

জানা গেছে, বিভাগীয় শহরগুলোতেও নানা রঙের পোস্টার ব্যানার ফেস্টুন প্লাকার্ড নিয়ন সাইবোর্ডের আলোর ঝলকানিতে দেশজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা কোনো পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ করতে চাচ্ছি না। আমরা আগামী ১৮ তারিখ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশ করবো। সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ আপনারা বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে এটাকে পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ মনে করবেন না।

তিনি বলেন, ‘প্লিজ আমি আপনাদের কাছে মাফ চাচ্ছি। আমাদের সমাবেশ নিয়ে রাজনীতি করতে চাচ্ছি না। যাতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সে জন্য আমারা ১৮ তারিখ শনিবার দেখে সমাবেশ দিয়েছি। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দেশে তারাই নীতি কথা বলে যারা বেশি দুর্নীতিবাজ। এই দেশে যারা নষ্ট রাজনীতি সূচনা করেছে, যারা সাম্প্রদায়িকতা করার চেষ্টা করেছে, যারা জঙ্গিবাদে মদদ দিয়েছে তারা বলে রাজনীতির গুণগত মান পরিবর্তনের কথা। ভুতের মুখে রাম নাম। তাই নয় কি?

সূত্র জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশের কথা বলা হলেও তা আওয়ামী লীগেরই মহাসমাবেশ হিসাবে রুপ নেবে। এ সমাবেশেই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধারণা করা হচ্ছে গত ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তৃতার নানা বিষয়ের জবাব এ সমাবেশ থেকে আসতে পারে।

দলীয় সূত্র জানায় সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশের মাধ্যমেই আগামী দিনের রাজনীতির মাঠ দখলে রাখতে আওয়ামী লীগ। দলটি নানা কর্মসূচি ঘোষণা করে মাঠে থাকার চেষ্টা করবে। তৃণমূলের রাজনীতি চাঙ্গা করতে বছরব্যাপী সাংগঠনিক কর্মসুচি পালন করাসহ সভাসমাবেশ করবে। বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও,সংঘাত-সংঘর্ষে জড়ালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে কঠোর হবে সরকার। হার্ডলাইনে থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বজায় রাখতে যা যা করার দরকার সরকার তা করবে।

সরকারী দলের নেতারা মনে করেন বিএনপি মাঠে থাকুক। তবে মাঠে থেকে বিশৃঙ্খলা করলে সরকার ব্যবস্থা নিবে। সূত্র জানায় বিএনপি নির্বাচনে আসার আগে তাদের দল গোছানোর জন্য সভাসমাবেশ গণসংযোগ করতে চাইলে সরকার তাদেরকে এসুযোগ দিবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য নয়। তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে সংযত হবে এটাই সরকার দেখতে চায় বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মনে করেন বিএনপি মাঠে থাকলে জ্বালাও-পোড়াও,সংঘাত-সংঘর্ষ ও জনভোগান্তি বাড়তে পারে। বিএনপির সাথে সংঘাতের রাজনীতিতে যাবে না আওয়ামী লীগ। বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করবে আওয়ামী লীগ। তবে সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে থেকে বিএনপিকে কঠোর হুশিয়ারী দিতে পারে ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ড।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত