ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

শিক্ষক নিয়োগ: প্রস্তুতি ও গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা

শিক্ষক নিয়োগ: প্রস্তুতি ও গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা
ফাইল ছবি

শিক্ষক একটি মহান পেশা। তাই অনেকের স্বপ্ন থাকে একজন ভালো শিক্ষক হওয়ার। আর সেই সুযোগ একটু চেষ্টা করলেই পাওয়া সম্ভব। কারণ বর্তমানে দেশের প্রায় সব জেলা-উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ বেড়ে চলছে। এছাড়াও রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও কিন্ডারগার্টেন। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছরই শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দেয়া হয়।

আবেদনের যোগ্যতা:

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হতে চাইলে পুরুষদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক পাস হতে হয়। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে এইচএসসি পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগে পাস হলে চলবে।

প্রধান শিক্ষকদের জন্য মহিলা পুরুষ উভয়েরই স্নাতকোত্তর পাস লাগবে। দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হলে, দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পেতে পারেন। এছাড়া সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য বিসিএস পাস হতে হবে।

তবে বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে চাইলে অবশ্যই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে।

নিয়োগ পদ্ধতি: প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি বিদ্যালয়ে নিয়োগ পেতে প্রার্থীকে ৮০ নম্বরের লিখিত ও ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আর বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অবশ্যই পাস করতে হবে। ২০০ নম্বরের মধ্যে নিবন্ধন পরীক্ষা হয়।

নিবন্ধন করার পদ্ধতি: বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক হতে চাইলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরেও শিক্ষক নিবন্ধন সনদের প্রয়োজন হয়। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন আইন ২০০৫ অনুসারে, শিক্ষক হিসেবে যোগ দিতে হলে আগে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এ আইন অনুসারে এনটিআরসিএ থেকে নিবন্ধিতও প্রত্যায়িত না হলে কেউ কোনো বেসরকারি স্কুল বা কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিতে পারবেন না।

নিবন্ধনের যোগ্যতা: শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে স্নাতক হতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে কারও যোগ্যতা থাকলেও আবেদনের ক্ষেত্রে বাধা নেই। সদ্য পাস করা প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়া প্রশংসাপত্র, টেব্যুলেশন শিট, মার্কশিট, প্রবেশপত্রসহ আবেদন করতে পারবেন।

নিবন্ধন পরীক্ষার পদ্ধতি: আবশ্যিক বিষয়গুলোর ওপর নৈর্ব্যক্তিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উভয় ক্ষেত্রেই পরীক্ষার মোট নম্বর ২০০। এ ক্ষেত্রে ১০০ আবশ্যিক এবং ১০০ ঐচ্ছিক। পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০।

যেভাবে আবেদন করবেন: অনলাইনে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে হয়। এ জন্য ntrca.teletalk.com.bd এই ঠিকানায় গিয়ে ফরম পূরণ করে নিবন্ধন করতে হবে। আবেদন সুষ্ঠুভাবে হলে পরীক্ষার্থীকে একটি নম্বর দেয়া হয়। এই নম্বর দিয়ে যেকোনো টেলিটক মোবাইল থেকে পরীক্ষার ফি বাবদ ৩৫০ টাকা প্রদান করতে হয়। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টাকা জমা দিতে হবে। টাকা জমা দেয়ার পর প্রার্থীকে ইনভয়েস নম্বর এবং পাসওয়ার্ডের সিরিয়াল নম্বর ফিরতি এসএমএসয়ের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। এই পাসওয়ার্ড ও ইনভয়েস নম্বর দিয়ে ওয়েবসাইট থেকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হয়।

যেভাবে প্রস্তুতি নিবেন: উল্লেখযোগ্য কবি-সাহিত্যিকদের জীবন ও সাহিত্যকর্ম, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। গল্প, কবিতা বা উপন্যাসের রচয়িতা থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। ব্যাকরণ অংশে শব্দ, পদ, কারক-বিভক্তি, প্রকৃতি-প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস, শুদ্ধ বানান পড়তে হবে। পারিভাষিক শব্দ, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ থেকেও প্রশ্ন আসতে পারে। সন্ধি, সমাস, কারক থেকে প্রতি বছরই প্রশ্ন থাকে, এসব প্রশ্ন একপলক দেখামাত্রই যেন উত্তর করা যায় সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

ইংরেজিতে জানতে হবে গ্রামার। বেসিক গ্রামার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। গ্রামারের বিচারে কোন বাক্যটি শুদ্ধ, কোনটি সঠিক এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসে।

গণিতের সমাধান বের করতে অনেকে বেশি সময় নিয়ে ফেলেন। এ ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। পুরোনো পাঠ্যক্রমের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির গণিত বই অনুসরণ করতে হবে।

সাধারণ জ্ঞানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, অভ্যুদয়ের ইতিহাস, জাতীয় বিষয়াবলী থেকে প্রশ্ন আসে। আন্তর্জাতিক অংশে দক্ষিণ এশিয়া এবং এশিয়া সম্পর্কিত প্রশ্ন বেশি দেখা যায়। খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পুরস্কার, দিবস ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন আসে। এ জন্য পড়তে হবে সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, নলেজ ভিউ বা কারেন্ট ওয়ার্ল্ড এবং নিয়মিত চোখ রাখতে হবে দৈনিক সংবাদপত্রে।

জেডএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত