ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

৪০ বছর পর ফের লেখাপড়া শুরু করলেন বিজিপি সাংসদ

৪০ বছর পর ফের লেখাপড়া শুরু করলেন বিজিপি সাংসদ
হলে বসে বিএ পরীক্ষা দিচ্ছেন বিজেপির সাংসদ ফুল সিংহ মীনা

সংসারের বোঝা টানতে গিয়ে স্কুলের পড়াশোনা অসমাপ্তই থেকে গিয়েছিল তার। কিন্তু ৪০ বছর পর নিজের মেয়েদের উৎসাহে ফের খাতা-কলম হাতে তুলে নিয়েছেন রাজস্থানের বিজেপি বিধায়ক ফুল সিংহ মীনা। ৫৫ বছরের রাজনীতিক এখন বিএ প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছেন।

নিজের পড়াশোনা ছিল সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। তবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর ফুল সিংহকেই শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে পড়ুয়াদের গুরুগম্ভীর পরামর্শ দিতে হত। তা যেন কেমন ফাঁপা বুলি মনে হত তার কাছে।

এ সম্পর্কে ফুল সিংহ বলেন, শেষে বিবেকের তাড়নাতেই আবারও স্কুলে যেতে শুরু করেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল পাঁচ মেয়ের উৎসাহ। তিনি বলেন, ‘সেনাকর্মী বাবার মৃত্যুর পর মাঝপথেই স্কুলের পড়া ছেড়ে দিতে হয়েছিল। চাষবাস করে সংসার চালাতে হত।’

রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর উদয়পুর (গ্রামীণ) বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপি-র টিকিটে জয়ী হন ফুল সিংহ মীনা। এর পরই তার মেয়েরা ফের পড়াশোনা শুরু করার জন্য বাবাকে উৎসাহ দিতে থাকেন। মেয়েরা বলেছিল, ‘বড় বড় আমলা, শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তোমার ওঠাবসা। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার জন্যও পড়াশোনাটা জরুরি।’

ফুল সিংহ জানিয়েছেন, নিজের বয়সের জন্য ফের পড়াশোনা শুরু করার ব্যাপারে প্রথম দিকে খানিকটা সন্দিহান ছিলেন তিনি। কিন্তু মেয়েরা তাকে পড়াশোনা শুরু করার জন্য উৎসাহ দিতে থাকেন। ফুল সিংহ বলেন, ‘আমার মনে হয়েছিল, মেয়েরা সঠিক কথাই বলেছে। মনে হয়েছিল, সকলকে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বললেও আমি নিজেই তো শিক্ষিত নই! বিবেকের তাড়নাতেই স্থির করি, ফের পড়াশোনা শুরু করব।’

এর পর স্থানীয় সরকারি স্কুলের এক শিক্ষকের কাছেই ফের পড়াশোনা শুরু করেন ফুল সিংহ। তার শিক্ষক সঞ্জয় লুনাওয়াত জানিয়েছেন, ব্যস্ত সময়ের ফাঁকেই পড়াশোনা চালিয়ে যান উদয়পুরের বিধায়ক। নিজের কেন্দ্রে ঘোরাফেরার মাঝে বিধায়ককে পড়াতে থাকেন তার শিক্ষক। তা সম্ভব না হলে অন্য উপায়ে পড়া চালিয়ে যান। কখনও অডিয়ো টেপ, কখনও বা আবার হোয়াট্‌সঅ্যাপের মাধ্যমে ছাত্রকে পড়াতে থাকেন সঞ্জয়।

ছাত্র ফুল সিংহের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি। শিক্ষক সঞ্জয় বলেন, ‘চল্লিশ বছর পরে শুরু করলেও খুবই নিষ্ঠার সঙ্গে পড়াশোনা করেন ফুল সিংহ। এমনকি টেকনোলজি ব্যবহারেও পিছপা হন না তিনি। ব্যস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচির মাঝে পরীক্ষায় বসতে কোনও দিন অজুহাত দেখাননি।’

পড়ুয়া বাবাকে নিয়ে গর্বের অন্ত নেই বিধায়কের পাঁচ মেয়ের। ফুল সিংহের তৃতীয় মেয়ে দীপিকা বলেন, ‘আমার বাবা খুবই পরিশ্রমী। ক্লাস টেন-টুয়েলভের পর এখন বিএ পড়ছেন। বাবার জন্য আমাদের গর্ববোধ হয়।’

আর বিধায়কের শিক্ষক সঞ্জয় জানিয়েছেন, এখানেই থেমে থাকবেন না তার ছাত্র। স্নাতকোত্তরের পর পিএচডি-ও করার ইচ্ছে রয়েছে ফুল সিংহের!

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত