ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন

  মীর ফরহাদ সুমন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:২৬

শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন

লক্ষ্মীপুরে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন। এ আলোয় আলোকিত হয়ে পিছিয়ে থাকা জীবনের অধিকার বঞ্চনা থেকে মুক্ত হওয়ার সক্ষমতা অর্জন করবে এসব শিশুরা। এমন চেতনালব্ধ প্রত্যাশায় কয়েকজন সমাজহিতৈষীর স্বেচ্ছা উদ্যোগে আলোর মশাল হয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠনটির পথচলা শুরু হয় বিগত ২০০৮ ইং সনে। সেই থেকে নিবেদিতভাবে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি।

এর মাঝে পার হয়ে গেছে প্রায় একযুগ। এই একযুগে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে ৭টি ব্যাচ। এর মধ্যে পাশ্ববর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে একটি ব্যাচ।

সম্প্রতি নানান উৎসব-আয়োজনের মধ্য দিয়ে মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতনের যুগপূর্তিও জানান দেয়া হয়। এ উপলক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলার মজুচৌধুরীর হাট এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব আঙিনায় আয়োজিত অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এ দিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্কুলের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোঃ কায়কোবাদ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আজিজুন নাহারের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটিরি সাধারণ সম্পাদক ও মাধ্যমিক-উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আক্তরুজ্জামান ভুঁইয়া।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস নয়ন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডাঃ আশফাকুর রহমান মামুন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল, ম্যানেজিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মনোয়ার হোসেন তৌফিক জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি বায়জীদ ভুঁইয়া প্রমুখ।

উৎসবের ওই অনুষ্ঠান আয়োজনকালে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা পক্ষ জানায়, শুরু থেকে সংকট আর সংকীর্ণতা সাথে নিয়েও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষার আলো বিতরণ করার কাজ চলছে। এটি টেকসই রাখার প্রয়াসে উদ্যোক্তাপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা ঘোষণা দিয়েছেন এদিন।

অস্থায়ী ভূমিতে অস্থায়ী অবকাঠামোতে অবস্থিত গুরুত্ববাহী এ শিক্ষার মশালটিকে স্থায়ী ভূমির অবকাঠামোতে রূপান্তরের পরিকল্পনা, ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে কারিগরি শিক্ষা প্রসারের পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে এতে। তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্থানীয় উদার মানসিকদের স্বেচ্ছা সহযোগিতা কামনা করে উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ কাজে সকলে সামষ্টিক অংশগ্রহণে এখানে মেঘনা নদীতে ভাসমান জীবনধারী সম্পূর্ণ সহায় সম্বলহীন জেলে ও বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে ন্যূনতম কল্যাণ সাধিত হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয় উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এমপি এ. কে. এম. শাহাজাহান কামাল বিদ্যালয়টির স্থায়ী ভূমি প্রাপ্তিতে সহযোগিতা প্রদানসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিগত ২০০৮ সালের ১৪ জুলাই পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে ৩৪ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২২৬ জন শিক্ষার্থী এখানে শিক্ষার আলো গ্রহণ করছে। নামমাত্র সম্মানীতে ৬ জন শিক্ষক এখানে পাঠদান কাজে নিবেদিত রয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন একজন তত্ত্বাবধায়ক। টিনশেডের একটি লম্বা ঘরের ছয়টি কক্ষে পাঠদান কাজ চলছে। আর একটি কক্ষ অফিস কার্যক্রমে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিদ্যালয়টি পরিচালনা ও অর্থায়নে ৫ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ, ৩ সদস্যের উদ্যোক্তা পরিষদ ও ৫ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ প্রাণান্তকর প্রচেষ্টায় আত্মনিয়োজিত রয়েছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত