ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

করোনার প্রভাবে ব্যাপক লোকসানে পোল্ট্রি খামারিরা

  ধামরাই প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০১ মে ২০২০, ১৫:১৬

করোনার প্রভাবে ব্যাপক লোকসানে পোল্ট্রি খামারিরা

সারাদেশের ন্যায় ঢাকার জেলার ধামরাইতেও ব্যাপক লোকসান গুনছে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা এই পোল্ট্রি শিল্প আজ ধ্বংসের পথে। করোনার প্রভাবের কারণে অনেক মুরগির খামার এখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। হতাশায় দিন গুনছে পোল্ট্রি খামারিরা। যে কোন সময়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই শিল্প।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি খামারের মালিক বলেন, ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা আনার কোন ব্যবস্থা নেই। আর কি করে আনবো সেই যোহানের ব্যবস্থাও নেই। কারণ এ বছর এমনিতেই মুরগির ব্যবসায় ধরা খেয়ে আছি। তার ওপর করোনার প্রভাবে মুরগির দাম একেবারেই কমে গেছে। একটি মুরগির বাচ্চা ১ মাস মাস লালন-পালন করে বাজারে ছাড়ার সময়ে কেজি প্রতি ১০০ বা ১২০ টাকা খরচ হয়। কিন্তু এখন প্রতি কেজি মুরগি খুচরা ব্যাবসায়ীদের কাছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা করে বিক্রি করতে হয়। তাই আমাদের খুব কষ্ট হয়ে যায়।

এমন দৃশ্য দেখা যায় উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি খামারে। হযরত আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী তার নিজস্ব তহবিলে একটি পোল্ট্রি খামার তৈরি করে। পরপর কয়েকবার তিনি খামারে লোকসান গুনছে।

তিনি বলেন, এইবার মুরগির বাচ্চা উঠাতে পরিবারের সবাই না করেছিল। কিন্তু না শুনে আমি আবার মুরগির বাচ্চা খামারে উঠাই। আর এবার তো বলার কিছুই নাই। করোনার প্রভাবে ৬০ টাকা কেজি মুরগি বিক্রি করতে হয়েছে। আর লোকসানের কথা তো বলারই নাই।

উপজেলার গাওয়াইল এলাকার পোল্ট্রি খামারি মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, বর্তমান পোল্ট্রি খামারের অবস্থা খুবই নাজুক। বেশিরভাগ ব্রয়লার মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক লেয়ার মুরগির খামারও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন পুরো উপজেলায় মাত্র ৫০ বা ৫৫টি'র মতো লেয়ার মুরগির খামার আছে। গত ৩ মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা মতো লোকসান হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব দ্রুতই মুরগির খামার বন্ধ হয়ে যাবে। এখন শুধু সরকারি প্রণোদনা ছাড়া আর খামার চালানো সম্ভব নয়।

উপজেলার দেপাশাই, শ্রীরামপুর, বান্নাখোলা, সূয়াপুর, গাওয়াইল, জলসিন, কুল্যা ও চাপিল এলাকায় বেশকিছু মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ করোনার প্রভাবোর কারণে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের অনেকেই নতুন করে খামারে মুরগি তোলা বন্ধ রেখেছেন। কারণ এর আগেরবার মুরগিতে বেশ ক্ষতি হয়েছে। তারপরও অনেকে নতুন করে লাভের আশায় তাদের খামারে মুরগি উঠান। কিন্তু করোনার কারণে সারা দেশ এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

উপজেলার চাপিল এলাকার মুরগি খামারের মালিক চান মিয়া বলেন, আমার ৩টি মুরগির খামার ছিল। গতবার বার্ড ফ্লুতে বেশ মুরগি মারা গেছে। তখন ২টি খামার বন্ধ করে দিয়ে ১টি খামার শুধু ডিম উৎপাদনের জন্য চালু রেখেছি। কিন্তু এবার এমন সময় আসলো করোনার কারণে মুরগির ডিম কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। করোনা রোগ আসার আগে ১ কেস ডিম ২২০ বা ২৩০ টাকায় বিক্রি করেছি। করোনার কারণে এখন ১ কেস ডিম ১ শত টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কিছুই করার নেই। কত ডিম নষ্ট হয়ে গেছে। এখন শুধু লোকসান গুনতে হচ্ছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাইদুর রহমান বলেন, বর্তমানে করোনার কারণে ধামরাইয়ের মুরগি খামারিদের অবস্থা নাজুক। প্রায় সকল খামারিরাই লোকসান গুনছে। তবে সরকার যদি মুরগি খামারিদের কোনপ্রকার প্রণোদনা দেয়, তখন আমরা ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের মধ্যে তা সুষম বণ্টন করে দেব।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত