ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

বৃষ্টি হলেই ডুবছে শহর

  শওকত জামান, জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২০, ১৮:৩৯  
আপডেট :
 ২৯ জুলাই ২০২০, ১৯:২৫

বৃষ্টি হলেই ডুবছে শহর

বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় ভোগে শহর। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান। একদিকে একের পর এক খাল-বিল ও জলাধার ভরাট করে বাসাবাড়ি, দোকানপাটসহ নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, অন্যদিকে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পয়ঃনিস্কাশনের অভাবে সৃষ্টি হয়েছে এ পরিস্থিতির। দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর শহরবাসী জলাবদ্ধতার ভোগান্তি পোহালেও তা নিরসনে পৌরসভার নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ।

জলাবদ্ধতা সৃষ্ট শহরের বেশ ক’টি এলাকা ঘুরে জলজটে আটকে পড়া ভুক্তভোগী শহরবাসীকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে লক্ষ্য করা গেছে।

তারা বলেন, আমরা জলে ডুবলেও খোঁজ নিতে আসেন না কোনো কাউন্সিলর, এমনকি মেয়রও। শহরবাসী দীর্ঘদিন ধরে এমন ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে নেন না কোনো ব্যবস্থা।

একটু বৃষ্টি হলেই শহরের প্রধান সড়ক দয়াময়ী মোড় হতে স্টেশন রোড, শহীদ হারুন সড়কে নতুন কুঁড়ি স্কুল থেকে চামড়াগুদাম মোড়, বানাকুড়া হয়ে পাঁচ রাস্তা মোড়, মিয়াপাড়া, ইকবালপুরে আব্দুর রহমান সড়ক, গোলাপ বাগ, পশ্চিম নয়াপাড়া, নিউ কলেজ রোড, শফি মিয়ার বাজার রোড, কাচারী পাড়া ফকির বাড়ি, মৃধা পাড়া, বাগান বাড়ী রোড, মালগুদাম রোড ও বোষপাড়া, আমলা পড়া দেওয়ান পাড়াসহ অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

শহরের দেওয়ান পাড়ার বাসিন্দা ওবায়দুল হক বাপ্পি বলেন, খাল-বিল ও জলাধার একদিকে অবৈধ দখলদাররা দখল করছে, অন্যদিকে ভরাট করে আবাসন ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে। সেখানে গড়ে উঠেছে বড় বড় বিল্ডিং। ফলে বৃষ্টির পানি নিস্কাসনের জায়গা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

মিয়াপাড়ার জয়নাল আবেদীন জানান, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই বাড়িতে কখনো হাঁটু পানি, কখনো কোমর পানি জমে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। র্দীঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় শহরবাসী ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ সমস্যাটির সমাধানে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছেন না।

পাঁচরাস্তা মোড়ের আব্দুল্লাহ বলেন, বৃষ্টি হলেও পাঁচরাস্তা মোড়টি নদী হয়ে যায়। অনেক সময় পানি নামতে দুইদিনও সময় লাগে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনগুলো পরিস্কার না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজেটে পয়ঃনিস্কাশনে অর্থ বরাদ্দ আছে। পয়ঃনিস্কাশনে পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীদের নিয়মিত বাস্তবে কাজ করতে না দেখা গেলেও কাগজে-কলমে কাজ দেখিয়ে পয়ঃনিস্কাশনের অর্থ ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে যায় কাউন্সিলর ও মেয়রের পকেটে। ড্রেনগুলোতে উপচেপড়া ময়লা থেকেই যাচ্ছে। ফলে বৃষ্টির পানি নামতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সড়কগুলোতে পানি জমছে।

মনিরাজপুরের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ খান বলেন, নিউ কলেজ রোডের ড্রেনটি পরিস্কার করতে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সংস্কার না করায় ড্রেনগুলো উপচে পড়ছে। এদিকে শহরের পানি নিস্কাশনের প্রধান মাধ্যম গবাখাল সংস্কারের অভাবে প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এই খাল দিয়ে আগের মতো পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। ফলে বৃষ্টি হলেই শহরের রাস্তাঘাটে পানি জমে যাচ্ছে।

জামালপুর পৌরসভা মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি জলবদ্ধতা বিষয়ে বলেন, ভরাট হয়ে যাওয়া ড্রেনগুলো পরিস্কারে পরিচ্ছন্নকর্মীরা কাজ করছে, গবাখালী খাল অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ ও সংস্কারে খুব শীঘ্রই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

জলাবদ্ধতার সমাধান কেনো হচ্ছে না, এ বিষয়ে মেয়র বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বন্যার সময়টাতে এই সমস্যা হয়। আশপাশের নদীর পানি বেড়ে যায় তার প্রভাব এখানে পড়ে।

তাহলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বন্যার সময়টাতে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, এ জন্যও আমরা কাজ করছি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত