ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

সেতু ভেঙে খালে

  কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২০, ১৭:১০  
আপডেট :
 ০৬ আগস্ট ২০২০, ১৭:৫২

সেতু ভেঙে খালে

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পাখিমারা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়েছে। বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। এ সময় সেতুর ওপর থাকা শহিদুল হক ও রুহুল আমিন মৃধা খালে পড়ে আহত হয়। তাৎক্ষণিক সাঁতরে তারা তীরে ওঠায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে সেতুটি ভেঙে পাড়ায় উপজেলা নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ গ্রামের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েছে ওইসব গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা খালের ওপর দুই দফায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১১৬ মিটার দীর্ঘ এ সেতুৃটি নির্মাণ করা হয়। কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সেতুটি নির্মাণ করে।

পুরনো সেতুর মালামাল খুলে এ সেতুটি নির্মাণ করার শুরু থেকেই সেতু পার হতে মানুষের মধ্যে ছিলো ভয় ও আতঙ্ক। কেননা সেতু নির্মাণের সময় খালে ঠিকভাবে লোহার খুঁটিগুলো পোঁতা হয়নি। লাগানো হয়নি খুঁটির সাথে আড়াআড়ি লোহার এ্যাঙ্গেল। এ কারণে সেতুতে মানুষ চলাচল করলেই দুলতো। কিন্তু বুধবার রাতে হঠাৎ মাত্র দুইজন মানুষ নিয়ে সেতুটির প্রায় ১১০ মিটার খালে পড়ে তলিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, এ সেতু পার হয়ে পাশ্ববর্তী মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের তেগাছিয়া গ্রামের মানুষ ছাড়া কুমির মারা, পূর্ব কুমিরমারা, পাখিমারা, মজিদর্পু, এলেমপুর, বাইনতলা, ফরিদগঞ্জ ও সুলতানগঞ্জ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এ ইউনিয়ন কৃষিতে সমৃদ্ধ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে করে এ গ্রামগুলো থেকে সবজি কিনে বিক্রি করে। কিন্তু সেতু ভেঙে পড়ায় এখন সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে সবজি চাষী ও স্থানীয়রা।

দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া কৃষক রুহুল আমিন মৃধা জানান, পাখিমারা বাজার থেকে কুমির গ্রামের বাসায় ফিরছিলেন সেতু দিয়ে। সেতুর মাঝ বরাবর আসার পর হঠাৎ বিকট শব্দ করে সেতুর কুমিরমারা অংশ ভেঙে পড়তে শুরু করে। সে ভয়ে পেছনের দিকে দৌড় দিলে তাও ভেঙে কাঁত হয়ে গেলে সে খালে পড়ে যায়। খালে কচুড়িপানা থাকায় প্রায় দশ মিনিট অন্ধকারে পানিতে হাবুডুবু খাওয়ার পর তীরে উঠতে সক্ষম হন।

ব্যবসায়ীরা জানান, তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে সবজি কিনতেন। এখন সেতু ভেঙে পড়ায় ছোট ডিঙি নৌকার ওপর তাদের নির্ভর করতে হবে। এসব নৌকায় চার-পাঁচজনের বেশি মানুষ ওঠানো যায় না। সেক্ষেত্রে মালামাল পরিবহনে তাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে।

কলেজ শিক্ষার্থী মো.বায়েজিদ জানায়, হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে। তখন খেয়া পার হয়ে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে।

নীলগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. নাসির মাহমুদ জানান, সেতু ভেঙে পড়ায় বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে ডিঙি নৌকায় করে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, সেতু ভেঙে পড়ায় খবর তিনি পেয়েছেন। এখন বিকল্প উপায়ে চলাচল অব্যাহত রাখতে ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। সেতুটি সংস্কারের বিষয়ে এলজিইডিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

কলাপাড়া এলজিইডির প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন জানান, পাখিমারা খালে আগে ছিলো কাঠের পুল। উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্তে ছয় বছর আগে একটি পুরনো আয়রণ সেতুর মালামাল দিয়ে ওই খালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে উপজেলায় ভেঙে পড়া ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলেই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত