ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

সুশান্তের মৃত্যুতে ফাঁসছেন রিয়া!

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২০, ২১:৩৪

সুশান্তের মৃত্যুতে ফাঁসছেন রিয়া!

সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত যত দ্রুত এগোচ্ছে ততই বের হয়ে আসছে চমকে দেয়ার মতো নানা তথ্য। আর এর বেশির ভাগ তথ্যই সুশান্তের বান্ধবীকে কেন্দ্র করে। তাই সুশান্ত মৃত্যুর তদন্তের জেরে যাবতীয় প্রশ্নের মুখে এক বাঙালি মেয়ে ‘রিয়া চক্রবর্তী’। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই তার নাম উঠে আসছে বার বার। আর আজ রিয়া চক্রবর্তীর কল রেকর্ড প্রকাশ্যে আসার পর এই প্রশ্নটি আরো জোরালো হয়েছে।

সিডিআই এর রিপোর্টের পর অনেকেই বলছে, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় রিয়া চক্রবর্তী কি ফেঁসে যাচ্ছেন। যদিও সুশান্ত মামলায় সিডিআই তদন্ত বেআইনি ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলেছেন রিয়া।

সুশান্তের বাবা ভারতীয় দণ্ডবিধির মোট ছ’টি ধারায় ছেলের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এফআই দায়ের করার পরেই আচমকা বদলে গিয়েছে তদন্তের ধারা। গোটা দেশ সুশান্তের মৃত্যুর ন্যায়বিচার চেয়ে তাকিয়ে আছে রিয়ার দিকে। সুশান্তের মৃত্যু তদন্তে কর্ণ জোহর থেকে সঞ্জয়লীলা ভানসালীর মতো ৩০ জন ব্যক্তিকে জেরা করার পরেও কেন শুধু এই বাঙালি মেয়ের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগের মোড় ঘুরল?

সুশান্তের বাবা’র ঠিক কি অভিযোগ, আনন্দবাজার তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে- সুশান্তের বাবার অভিযোগ, একদিকে সুশান্তকে ধরে যেমন নিজের কেরিয়ার তৈরি করছিলেন রিয়া অন্যদিকে পরিবারের সঙ্গে সুশান্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করেন তিনিই। সুশান্তের বাবা বিস্ময়ের সঙ্গে জানান, ২০১৯ পর্যন্ত সুশান্তের কোনও মানসিক সমস্যা ছিল না। রিয়ার জন্যই পরিবারের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না অভিনেতার। কবে তার মানসিক সমস্যা শুরু হল তারা জানেন না।

তদন্তের অভিমুখ এখন রিয়া চক্রবর্তীর সম্পত্তি, টাকাপয়সা ও বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়ে। একটানা প্রায় ছ’ঘণ্টার উপর ইডি দপ্তরে রিয়ার জেরা চলছে। ঘুরেফিরে উঠছে রিয়ার সম্পত্তি আর টাকাপয়সা খরচের প্রশ্ন। ২০১৮-’১৯-এ রিয়া চক্রবর্তী যেখানে ১৪ লাখ টাকা রোজগার করেন, সেখানে কিভাবে ৬৫ লাখ টাকা খরচ করলেন তিনি? সে টাকা কোথা থেকে কিভাবে পেলেন রিয়া?

সুশান্তের বাড়ির পরিচালক, ম্যানেজার, ড্রাইভার, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সকলেই জানাচ্ছেন, সুশান্তকে সম্পূর্ণ নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিলেন রিয়া। সমস্ত খরচ করতেন সুশান্তের ক্রেডিট কার্ডে। শপিং থেকে শুরু করে ইয়োরোপ ভ্রমণ, সবটাই হত সুশান্তের টাকায়।

রিয়া চক্রবর্তী প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মুম্বাইয়ের সংবাদমাধ্যমকে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের সম্পর্কিত দাদা নীরজ কুমার সিংহ বলেন, রিয়া চক্রবর্তী যদি নির্দোষ হন তাহলে তিনি যেন পালিয়ে না বেড়ান। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সুশান্তের দাদা বলেন, রিয়া নির্দোষ হলে তদন্তে তার সাহায্য করা উচিত।

এদিকে মুম্বাই পুলিশের এক কর্তার সঙ্গে ফোনে বেশ কয়েক বার রিয়া চক্রবর্তী কথা বলেছেন। রিয়ার ফোন কল থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে মুম্বাইয়ের সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। গত ২০ জুন বান্দ্রার ডিসিপি অভিষেক ত্রিমুখে প্রথম রিয়াকে এসএমএস করেন। গত ২১ জুন ২৮ সেকেন্ড তাদের মধ্যে কথা হয়! সেই ফোন করেন রিয়া। সকাল সাড়ে ১০টায় ফোন আসে। এর পরে অভিষেকও রিয়াকে ফোন করেন। এজন্য বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে মুম্বাই পুলিশ কি রিয়াকে বাঁচাতে চেয়েছে? মুম্বাই পুলিশ কোনও দিন রিয়াকে আলাদা ডেকে জেরা করেনি কেন? এখন এই প্রশ্নই সুশান্ত তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মুম্বাইয়ের সংবাদমাধ্যমে আরো বলা হয়েছে, গত ২০ জুন থেকে ১৮ জুলাই মোট চারবার বান্দ্রার ডিসিপি অভিষেক ত্রিমুখি আর রিয়ার মধ্যে ফোনে কথা হয়। তাদের মধ্যে এসএমএস বিনিময়ও হয়। কিন্তু সে খবর কেউ এতদিন জানতে পারেনি। উল্টো বিহার পুলিশ যখন রিয়াকে খুঁজছে তখন মুম্বাই পুলিশ জানায় রিয়া কোথায় তারা জানে না। কেন এমন করছে মুম্বাই পুলিশ? কার সমর্থনে এই কাজে রিয়ার পাশে মুম্বাই পুলিশ? সারাদেশ এখন এই প্রশ্নে মুখর।

এর পরপরই আজ (শুক্রবার) প্রকাশ্য আসে রিয়া চক্রবর্তীর কল রেকর্ড। সিডিআই রিপোর্টে দাবি করা হয়, সুশান্তের মৃত্যুর পর রিয়ার সঙ্গে কথা হয় মুম্বাই পুলিসের পদস্থ আধিকারিক অভিষেক ত্রিমুখির। আর এটা এক তরফা কল নয়। মুম্বাই পুলিশের ওই পদস্থ আধিকারিক দুইবার ফোন করেন রিয়াকে।

অভিনেত্রীও তাকে দুইবার ফোন করে। আর তাদের মধ্যে একবার মেসেজের আদান প্রদান হয়। যে তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই জোর শোরগোল শুরু হয়ে যায়।

অন্যদিকে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় সিডিআই তদন্ত বেআইনি এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসছে ততক্ষণ সিডিআই তদন্ত শুরু করতে পারে না। শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে এসব কথা বলেছেন রিয়া চক্রবর্তী। তার প্রশ্ন, সুশান্তের মৃত্যু হয়েছে মুম্বাইতে, তাই এই মামলার তদন্তে মুম্বাই পুলিশের বদলে বিহার পুলিস এবং সিডিআই মিলে কিভাবে করতে পারে?

গত ৬ জুন সুশান্তের বাড়ি ছাড়েন রিয়া। ১৪ জুন সুশান্তের মৃত্যু হয়। সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে যে মেয়ে অমিত শাহকে টুইট করেছিলেন আজ তিনিই সেই তদন্তের কেন্দ্রে! কেন এমন হল?

আরো পড়ুন

সুশান্তের মৃত্যু, বিস্ফোরক তথ্য দিলেন সহকারী​

মুম্বাই পুলিশের সঙ্গে কি কথা রিয়ার?

সুইসাইড নোট লিখে ভারতীয় অভিনেত্রীর আত্মহত্যা​

মুম্বাইতে আরও এক অভিনেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার​

সুশান্তের ম্যানেজার দিশার পোস্টমর্টেম রিপোর্টে নতুন তথ্য

সুশান্ত মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইতে হস্তান্তর​

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত