ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

এমন ভালোবাসা কয়জনে পায়: অপূর্ব

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:৫৫  
আপডেট :
 ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫:১১

এমন ভালোবাসা কয়জনে পায়: অপূর্ব
জিয়াউল ফারুক অপূর্ব

মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও নিজেকে থীতু করেছেন নাটকেই। নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় স্বকীয়তার স্বাক্ষর রেখেছেন। অভিনয় দিয়ে পৌঁছেছেন সাফল্যের শিখরে। ছোট পর্দার ‘রোমান্স কিং’ বলা হয় যাকে তিনি আর কেউ নন, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। যিনি সারাবছরই অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। দর্শকরাও মুখিয়ে থাকেন তার নতুন কাজের অপেক্ষায়। সম্প্রতি করোনা জয় করে ফিরেছেন কাজে। সেখানেই কাজের ব্যস্ততা ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ জার্নালের বিনোদন বিভাগে কথা বলেন ছোট পর্দার এই ‘সুপারস্টার’। তাকে নিয়ে লিখেছেন ইমরুল নূর

বাংলাদেশ জার্নাল: করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেটা জয় করে ফিরেছেন কাজে। হাসপাতালে কাটানো এই সময়টা আসলে আপনার কাছে কেমন ছিলো?

অপূর্ব: এই সময়টা আমার কাছে খুবই ভয়ঙ্কর ছিলো। কিন্তু পরিবার, সহকর্মী, ভক্তরা যেভাবে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছে; এটা সত্যিই অকল্পনীয়। অনেকেই বিভিন্ন সময়ে বলে থাকেন যে, ‘মিডিয়ার মানুষরা নাকি পরিবার হয় না’! এটা আসলে ভুল। আমি অসুস্থ হওয়ার পর সবার কাছ থেকে এত এত সাপোর্ট পেয়েছি যা বলার বাইরে। আমার কাছে মনে হয়েছে, এরাই আমার পরিবার। পরিবারের মানুষরা যেভাবে সার্বক্ষণিক পাশে থেকে সেবা শুশ্রুষা করে, আমি সেটাই পেয়েছি। আমি করোনার রোগী, অথচ সবাই আমাকে দেখতে কেবিনে ভিড় জমিয়েছে। সারাক্ষণ আমার সেবা করেছে। কারও মধ্যে কোন ভয় নেই যে তাদেরও তো করোনা হতে পারে! তারা কোন কিছুই তোয়াক্কা না করে আমার পাশে ছিলেন প্রতিটা মুহূর্তে। আমার যে পরিমাণ টেক কেয়ার এবং মেন্টাল সাপোর্ট দিয়েছে সবাই, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এমন ভালোবাসা কয়জনে পায়! আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

বাংলাদেশ জার্নাল: এখন শারীরিক ভাবে কতটা সুস্থ অনুভব করছেন?

অপূর্ব: সম্পূর্ণ সুস্থ বলতে কিছুটা দুর্বলতা তো থাকেই। তবে একদম সুস্থ অনুভব করছি তবে যেহেতু কাজে ফিরেছি সেই কাজের লোড কতটা নিতে পারবো এখনও বুঝে উঠতে পারছি না। এখন পর্যন্ত শুটিংয়ে ফিরে অন্যরকম কিছু মনে হয়নি। আমার কাছে মনে হয়েছে আমার সেই পুরনো জায়গায় ফিরেছি। আর কাজের ক্ষেত্রে পরিচালকদের কাছ থেকে যথেষ্ট স্পেস পাচ্ছি, এখন পর্যন্ত আরামদায়কই মনে হচ্ছে। প্রেশার নিচ্ছি না কোনোরকম।

বাংলাদেশ জার্নাল: এই সময়ে আপনার ডেট পাওয়া মানেই পরিচালকদের কাছে সোনার হরিণের মতো; সেখানে অসুস্থতার কারণে অনেকটা সময় কাজ থেকে দূরে থাকতে হয়েছে আপনাকে। এরজন্য কোন পরিচালক কি ফেঁসেছেন কোন কাজের জন্য?

অপূর্ব: আমার জন্য সিনেমাটাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতি বলতে, আমার জন্য পুরো একটা মাস পিছিয়ে গিয়েছে সিনেমার কাজ। এই সময়টাতে সিনেমার জন্যই শিডিউল দেওয়া ছিলো; নাটকের কাজগুলো আগেই শেষ করে নিয়েছিলাম। যার কারণে নাটকের কারও কোন ক্ষতি হয়নি কিন্তু সিনেমাটা পিছিয়ে গিয়েছে।

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, ছবি: মোহসীন আহমেদ কাউছার

বাংলাদেশ জার্নাল: সামনের ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাই...

অপূর্ব: এরমধ্যে দুটো নাটকের কাজ শেষ করেছি। আর কোনো কাজ রাখিনি। আর ৩ ডিসেম্বর থেকে ‘যদি কিন্তু তবুও...’ সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নেবো। পুরো ডিসেম্বর মাসজুড়ে সিনেমার শুটিং নিয়েই ব্যস্ত থাকবো। এরপর জানুয়ারি থেকে আবারও নাটকের কাজ শুরু করবো। অনেকেই ভালোবাসা দিবসের কাজের জন্য ডেট চাচ্ছেন। সেগুলো জানুয়ারি থেকে শুরু করবো। এখন এই মাসটা সিনেমাতেই মনযোগ দিতে চাই। একটানা কাজের মাধ্যমে শেষ করে ফেলতে চাই।

বাংলাদেশ জার্নাল: অপূর্বকে কখনো মিউজিক ভিডিওতে বা বিজ্ঞাপনে দেখা যায় না কেন?

অপূর্ব: আমি কয়েকটা মিউজিক ভিডিও করেছি অনেক আগে। করি না যে ঠিক তা না। আর বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বলবো, আমার লাক ফেভার করে না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি ব্যাটে-বলে মিলে না; যার জন্য করা হয় না। আমি সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যাকে প্রতিশ্রুতি দেই আমি সেটা রাখার চেষ্টা করি সবসময়। যেহেতু আগে থেকে নাটকের জন্য আমার শিডিউল দেওয়া থাকে তাই অনেক সময় বিজ্ঞাপনের জন্য ডেট মিলানোটা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রায় সময়ই দেখি যেই বিজ্ঞাপনগুলোর প্রস্তাব পেয়েছি সেগুলোর ডেট পড়েছে আমার নাটকের শিডিউলে। তারপর আমি নাটকের পরিচালকদের সাথে কথা বলে সেটা পেছানো যায় কিনা চেষ্টা করেছি; কিন্তু তখন দেখি আমার জন্য অন্যান্যরা ঝামেলায় পড়ে যাবে, যার কারণে বিজ্ঞাপনটাই বাদ দিতে হলো। এরকম অনেকবার হয়েছে আমার সাথে। এরজন্যই বলি বিজ্ঞাপনে আমার লাক ফেভার করে না।

বাংলাদেশ জার্নাল: মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে এখন নিজেকে অভিনয়েই প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন। যেটা আপনার শুরু বা অস্তিত্ব সেই মডেলিংটা মিস করেন কখনো?

অপূর্ব: মাঝেমাঝে মিস করি। আমি তো আসলে র‍্যাম্পে ছিলাম, যার কারণে র‍্যাম্পটাকে খুব মিস করি। সেই সময়টাই অন্যরকম ছিলো। এখন অভিনয়ের কারণে সেটা আর করা সম্ভব হয়ে উঠে না।

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, ছবি: মোহসীন আহমেদ কাউছার

বাংলাদেশ জার্নাল: নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করা অপূর্ব মানেই এখন রোমান্টিকতা। এই সময়ে আপনাকে ‘রোমান্স কিং’ বলা হয়। রোমান্টিকতার বাইরে আপনাকে এখন দেখা যায় না কেন?

অপূর্ব: একটা ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে অনেক শিল্পী কাজ করে। একেকজন একেক জনরার জন্য সুপরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত। তার মধ্যে আমাকে দর্শকরা রোমান্টিক নাটকেই বেশি পছন্দ করে। যার কারণে তারা আমাকে ‘রোমান্স কিং’ বলে ডাকে বা ভালোবাসা প্রকাশ করে। এখন নিজেকে এই জনরার জন্য প্রস্তুত করতে আমার এক যুগেরও বেশি সময় লেগেছে। আমি এটার জন্যই আজ প্রতিষ্ঠিত। অনেক কষ্ট করে নিজের এই ইমেজটা গড়েছি। আর গুটিকয়েক মানুষজন হয়তো চরিত্র ভাঙার কথা বলেন, কিন্তু সবাই না।

অনেকেই নানান সময়ে বলে থাকেন যে অপূর্ব কেন নিজেকে ভাঙছেন না; সেক্ষেত্রে আমি বলবো, আমি নিজেকে রোমান্টিক অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি ভাঙার জন্য নয়। আমি যা, যেমন এটার জন্যই দর্শকরা আমাকে পছন্দ করেন।

কই কখনো কোন কণ্ঠশিল্পীকে তো এমন প্রশ্ন করতে দেখি না যে আপনি রবীন্দ্রসংগীত করেন, আপনাকে রক গান কিংবা অন্য জনরায় পাওয়া যায় না কেন! গানের ক্ষেত্রেও যা অভিনয়ের ক্ষেত্রেও তাই। কারণ, প্রত্যেকেরই একটা নিজস্বতা আছে যেটা তাকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা করে।

তবে হ্যাঁ, এটা বলা যেতে পারে নানামাত্রিক চরিত্রে আমি একসময় অনেক কাজ করেছি। এমন অনেক চরিত্রই আছে যেগুলোতে আমি কাজ করতে চাই। আমাদের চোখের সামনেই কত শত চরিত্র! সেসব চরিত্রে কাজ করার ইচ্ছা তো আছেই। তাই বলে আমার যে রোমান্টিসিজম; এটার বাইরে না। একেকজনের যেমন একেকটা বিশেষত্ব আছে তেমনি আমার বিশেষত্বই হচ্ছে রোমান্টিকতা।

বাংলাদেশ জার্নাল: সর্বশেষ প্রশ্ন, যেহেতু করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে একটা খারাপ সময় পার করে এসেছেন সেক্ষেত্রে এই মহামারী নিয়ে সবার সচেতনতার উদ্দেশে আপনি কি বলবেন?

অপূর্ব: এটা আসলে বলা যায় না যে কার হবে বা কার হবে না! তবে আমাদের সবার প্রত্যেকেরই উচিত এই বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন থাকা। কারণ আমি নিজেও অনেক সাবধানতা মেনে চলেছি তারপরও আমি রেহাই পাইনি। তাই কিছুই বলা যায় না। নিজেকে নিজেরই সেইফ রাখতে হবে। সবসময় মাস্ক পড়তে হবে আর হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা যেটা হচ্ছে ‘হু’ এর নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত