ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

এত মানুষ পছন্দ করবে, কখনো ভাবিনি: দীপান্বিতা

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ০৫ মে ২০২১, ১৩:৩২

এত মানুষ পছন্দ করবে, কখনো ভাবিনি: দীপান্বিতা

মাত্র একটি কাজ দিয়ে হাজারো তরুণের মন কেড়েছিল ‘দীপান্বিতা’। সদ্য প্রেমে পড়া তরুণ-তরুণী ছাড়াও অনেকের মনে এই নামটি ঠাই করে নিয়েছিলো ২০১৪ সালে প্রচার হওয়া ‘সরি দীপান্বিতা’ নাটকের মাধ্যমে।

নাটকটির টাইটেল গান ‘দীপান্বিতা’ খুব অল্প সময়ে হয়ে উঠেছিলো জনপ্রিয়। ৭ বছর পরে এখনও তরুণ-তরুণীদের মুখে মুখে ফিরে রোমান্টিক এ গানটি। স্বরাজ দেবের কথা ও সুরে গানটির সংগীতায়োজন করেছিলেন শাখাওয়াত অর্ণক।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছয় বন্ধুর কাহিনী নিয়ে নির্মিত এ নাটকের গল্পটি বাস্তবের কাছেও হার মেনে যায় একসময়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সহজ সরল বোকা এক মেয়ের দীপান্বিতা থেকে দীপু হওয়ার গল্প সবার মনে গেঁথে যায়। শেষাংশের অপূর্ণতাই যেন গল্পের নায়ক-নায়িকাকে দিয়েছে প্রাপ্তি আর দর্শকদেরকে দিয়েছে আশা। স্বরাজ দেবের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এতে দেখা মিলেছিল কতগুলো তরুণ মুখের। গল্পের আকাশ ও দীপান্বিতা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জীবন রায় ও নাফিয়া বিনতে রায়হান তূর্ণা।

৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এ গল্পের নায়ক-নায়িকারা এখনও তরুণদের মনে রয়েছেন এক অন্যরকম ভালোবাসার জায়গায়।

আকাশ চরিত্রে রূপদানকারী জীবন এখন অভিনয় নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করলেও অন্যদিকে গল্পের মূল আকর্ষণ দীপান্বিতা চরিত্রে রূপদানকারিনী নাফিয়া ব্যস্ত রয়েছেন স্বামী, সংসার ও সন্তান নিয়ে। অনেক বছর ধরেই নিখোঁজ তিনি, এরপর আর কোন কাজে দেখা যায়নি তাকে।

মঙ্গলবার নাফিয়ার জন্মদিন। জন্মদিনে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও অনুরাগীদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা পাচ্ছেন। জন্মদিনেই তার সঙ্গে কথা হয়।

জন্মদিন প্রসঙ্গে নাফিয়া রায়হান বলেন, এখন আসলে আগের মতো করে আর জন্মদিন পালন করা হয় না। পরিবার নিয়েই সময়টা কেটে যায়। আর যেহেতু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে আছি, ক্লাস নিতে হয় প্রতিনিয়ত এখন। তারপরও শত ব্যস্ততার মধ্যে সবাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন দেখে ভালো লাগছে খুব।

তিনি আরো বলেন, আমার জন্মদিন ৫ মে আর আমার বড় বোনের জন্মদিন ১১ মে। আমরা সবসময় এই দুই তারিখের মাঝামাঝি সময়ে যেকোন একটা দিন একসঙ্গে জন্মদিন পালন করতাম। এটা আমার জন্য বেশ আনন্দের একটা স্মৃতি।

‘সরি দীপান্বিতা’র পর আর কোন কাজে দেখা যায়নি তাকে। তবে শিগগিরই কাজ করবেন বলে জানান তিনি। নাফিয়া বলেন, আসলে যশোরে থাকার কারণে কাজ নিয়ে ওরকম করে প্ল্যান করা হয়নি। গত বছরেই ঢাকাতে শিফট হওয়ার কথা ছিল কিন্ত প্যান্ডামিক সিচুয়েশনের কারণে তা আর হয়নি। এবছর জুলাইয়ের পর ঢাকায় আসার প্ল্যান রয়েছে, সবকিছু একটু স্বাভাবিক হলে ইনশাআল্লাহ ঢাকাতে শিফট হবো। ঢাকায় থাকলে কাজ করতে সুবিধা হবে।

এরমধ্যে আমার ওই নাটকের সহশিল্পী জীবন ভাইয়া আমাকে কয়েকবারই নতুন কাজের প্রস্তাব দিয়েছেন। দূরে থাকায় তা আর করতে পারিনি। এছাড়াও আমি ‘সরি দীপান্বিতা’র পর অনেক অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। তখন এতকিছু বুঝতামও না আমি। সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছু বুঝেছি। আশা করছি সামনে নাটক করবো।

তিনি আরো বলেন, ‘সরি দীপান্বিতা’র কারণে যে সবাই আমাকে এতো পছন্দ করবে, সেটা কখনোই ভাবিনি। এখনো মানুষ আমাকে মনে রেখেছে, এটা ভেবেই আমি খুব অবাক হই। আমি তো কোনো সেলেব্রিটি নই, তারপরও মানুষ আমাকে মনে রাখে, ভালোবাসে। এটা বিশাল বড় পাওয়া আমার জন্য।

নাফিয়া থেকে দীপান্বিতা, এরপর দারুণ সাড়া! অনুভূতি কেমন? এমন প্রশ্নে এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, অভিনয় করার ইচ্ছে ওরকমভাবে ছিল না। স্বরাজ ভাইয়া, জীবন ভাইয়া ও আরও যারা ছিলেন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

কাজটা যখন সবদিকে খুব সাড়া পেতে লাগলো তখনও আমার মধ্যে প্রথমদিকে বাড়তি কোন অনুভূতি কাজ করছিল না। আমি যখন বাসে চড়তাম তখন দেখি গানটির টিউন অনেকের মোবাইলে, এরপর শপিং করতে গেলে শপিংমলের প্রায় দোকানগুলোতে দেখতাম ‘দীপান্বিতা’ গানটা বাজতো। তখন আশেপাশের মানুষজন আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো আর বলতো ‘গানটার নায়িকা’! কয়েকজন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করতো, আমি দীপান্বিতা কিনা! তখন আমি মাথা নিচু করে বলতাম ‘জ্বি’। এরপর অনেকেই আমার সাথে ছবি তুলতে আসে, আমার খুব লজ্জা লাগতো তখন।

যখন যেখানে যেতাম সবাই শুধু ‘দীপান্বিতা’ বলে ডাকতো আর ছবি তুলতে চাইতো। এরকম যখন অনেকদিন চলতে লাগলো তখন ফিল করতে শুরু করলাম সেই আনন্দটা। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত সাড়া পাচ্ছি। এটা আসলে একটা অন্যরকম ভালো লাগা। দীপান্বিতার কাছে আমার আসল নামটাই হারিয়ে গেলো।

রাজশাহীর মেয়ে নাফিয়া বিনতে রায়হান তূর্ণা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যজীবন ও মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপরই নেদারল্যান্ডস চলে যান উচ্চতর শিক্ষার জন্য। ২০১৬ সালে দেশে ফিরেন। এখন সপরিবারে যশোরে অবস্থান করছেন তিনি। এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন এখন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত