ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

বন্যায় ভাসছে ভারত, নিহত প্রায় ১শ

বন্যায় ভাসছে ভারত, নিহত প্রায় ১শ

বন্যার পানিতে ভাসছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে কেরালা, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, ওড়িশ্যা ও গুজরাটে। ওই রাজ্যগুলো গত কয়েকদিনের বন্যায় ৯৬ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মধ্যমগুলো। এদের মধ্যে কেরালায় ৪৮ জন এবং মহারাষ্ট্রেই প্রাণ হারিয়েছে ২৮ জন।

এ অবস্থায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে কেরালার নয় জেলায়। উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার জন্য শুক্রবার সকাল থেকেই সেনাবাহিনী নেমেছে বানভাসি কেরালায়। মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) আরও ১৩ কোম্পানি। ডুবে যাওয়া ওয়েইনাড় জেলায় উদ্ধার ও ত্রাণে শনিবার সকালেই পৌঁছে গিয়েছে নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার। মালাপ্পুরম জেলার অবস্থাও ভয়াবহ।

এদিকে, মহারাষ্ট্রের গোটা কোলহাপুর শহরটাই চলে গিয়েছে প্রায় ১০ ফুট গভীর পানির নিচে। ফ্লাইওভারের উপর থেকে দেখা যাচ্ছে শুধুই বহুতলগুলির ছাদ। পানি কোথাও কোথাও প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে ফ্লাইওভারকেও! রাজ্যের কোলহাপুর, সাতারা ও সাংলি জেলা থেকে দু’লক্ষাধিক মানুষকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মহারাষ্ট্র, কেরালা ও কর্নাটকে মোতায়েন করা হয়েছে এনডিআরএফ-এর অন্তত ২৫০টি দল।

বন্যায় কর্নাটক রাজ্যে মারা গেছে ১২ জন। ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় কৃষ্ণা নদীর বাঁধ থেকে প্রায় পৌনে ৬ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তার ফলে ভেসে গিয়েছে সারপুর তালুকের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও গোটা ইয়াদগির জেলা। মুম্বই ও বেঙ্গালুরুর মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী ২৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি তলিয়ে গিয়েছে।

একটানা প্রবল বর্ষণের জেরে বানভাসি হয়ে গিয়েছে মালাপ্পুরম-সহ কেরলের বেশ কয়েকটি জেলা। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে কম করে ৪২ জনের। সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে রাজ্য প্রশাসন। ওয়েইনাড় জেলায় ধসে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় ২২ হাজার মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৩১৫টি ত্রাণ শিবিরে। কোঝিকোড় জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।

চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে ওয়েইনাড়, ইদুক্কি, মালাপ্পুরম ও কোঝিকোড়-সহ ৯টি জেলায়। বন্যার কারণে কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার বিকেল পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্যের ১৪টি জেলার সব স্কুল, কলেজই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণে সেনাবাহিনী নেমেছে আলাপ্পুঝা, পাঠানামথিট্টা ও এর্নাকুলামে। বন্যায় ভয়াবহ অবস্থা কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর আগামী বুধবার পর্যন্ত প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। জানানো হয়েছে, ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আর তার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে পাঠানামথিট্টা, কোট্টায়াম, ইদুক্কি, এর্নাকুলাম এবং ত্রিশূর এলাকাগুলোতে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়েইনাড়ের একটি চা বাগানে ধস নামে। তার জেরে বহু শ্রমিকের ঘরবাড়ি ভেসে যায় জলের তোড়ে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কম করে ১৫০ জন ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে পড়েছেন। জখম হয়েছেন ২০০ জন। ৬০ জনকে ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে। মিলেছে দু’জনের মরদেহও। তবে ধসের জন্য উদ্ধারকাজ চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। গত ২০ বছরে এতটা ধস নামেনি এই অঞ্চলে।

এদিকে প্রবল বর্ষণে দক্ষিণ ও পশ্চিম উড়িশ্যায় গত এক সপ্তাহে তিনজন মারা গেছে। আর চার নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে তামিলনাড়ু রাজ্যে।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত