ধর্ষণ ও নুরকে নিয়ে যা বললেন সেই ঢাবি ছাত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৩০
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে। আর ধর্ষণে সহযোগিতাকারী হিসেবে নুরুল হক নুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ধর্ষণের স্থান হিসেবে লালবাগ থানার নবাবগঞ্জ বড় মসজিদ রোডে হাসান আল মামুনের বাসার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদী শিক্ষার্থী ঢাবির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকেন। এ ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি মেয়েটির একটি সাক্ষাৎকার সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
আরো পড়ুন- নুর মানসিক বিকারগ্রস্ত
সেখানে তিনি বলেন, একটা খবর প্রকাশ পেয়েছে যে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা ঢাবি শিক্ষার্থীর। এই শিরোনামে একটা নিউজ হয়। আমি কিন্তু আমার এজাহারের কোথাও সেটা লিখিনি যে ভিপি নুর হচ্ছে ধর্ষক। তবে ধর্ষণে সহায়তা বলতে আমি বুঝিয়েছি, বিচার প্রাপ্তিতে সে (ভিপি নুর) বাধা দিয়েছে। আর যে অপরাধী, একজন ধর্ষককে সে আশ্রয় দিয়েছে। আমি ভিপি নুরের ব্যাপারে এভাবে বলেছি। একটা বিষয় হচ্ছে যে, আমি কারো প্ররোচনায়, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্ররোচনায় পড়ে আমি এমন করছি এরকম কিছু না। কুৎসা যদি রটানো হয় তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা আমি নেবো।
আরো পড়ুন- আটকের পর মুচলেকায় ছাড়া পেলেন ভিপি নুর
অনেকেই বলছেন যে, ধর্ষক নয় ধর্ষিতার ছবি প্রকাশ করুন। এই বিষয়টা মনে হয় এ দেশে ইতিহাসে আমিই প্রথম যার সাথে এরকমটা হচ্ছে। কোনো মেয়ে কোনো নির্যাতিতার ছবি প্রকাশ করতে বলছে, ধর্ষকের ছবি প্রকাশ করো না বলছে। আসামিরা যে জনপ্রিয় সেই জনপ্রিয়তার জন্যে হয়তো সত্যিটা ঢেকে যাচ্ছে। আর যারা জনপ্রিয় তারা কি অন্যায় করে না? যারা জনপ্রিয় তাদের মানসম্মান আছে, আমার কি মানসম্মান নেই? নুরুল হক নুর একটা লাইভে বলেছেন যে, টাকার বিনিময়ে কোনো এক সংগঠনের প্রসংশা করার জন্য আমি এটা করেছি। উনি যদি এটা প্রমাণ করতে পারেন যে টাকার বিনিময়ে আমি এটা করেছি, তো তিনি যেনো একটা প্রমাণ করে দেন। আর যদি উনি এটা প্রমাণ করতে না পারেন যে আমি টাকার বিনিময়ে মামলা করে ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি, তাহলে আমি তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে যে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ বা ঢাকা ইউনিভার্সিটি বা এমন কোনো জায়গায় এমন কোনো সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি যে, একটা মেয়ে তার সম্ভ্রমটাকে পুঁজি করে একটা মিথ্যা মামলা করবে। আমাকে নিয়ে যে রকমটা বলা হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নাই আসলে। আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ি, কারো প্ররোচনায় বা টাকা নিয়ে আমি এমনটা করছি, সেটার কোনো ভিত্তি নাই।
আরো পড়ুন- জেল না খাটলে তো নেতা হওয়া যায় না
আমি যখন ওনাদের কাছে ছাত্রলীগের কাছে বিচারের জন্য গিয়েছি, সমস্যা সমাধান নামে একটা গ্রুপ খোলা হয়...।
এরপর মেয়েটি সেই গ্রুপে যারা সদস্য ছিলেন তাদের কয়েকজনের নাম বলেন।
আরো পড়ুন- হু ইজ নুর? নুর কে?
প্রসঙ্গত, ২১ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় ‘হয়রানিমূলক মামলা’র প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নুরুল হক নুরসহ ৬ জনকে আটক করে পুলিশ। সন্ধ্যার দিকে ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে ভিপি নুর ও তার সহযোগীরা শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবনের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তারা পুলিশের কাজে বাধা দিলে মৎস্য ভবন এলাকা থেকে নুরুল হক নুরসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আবারো রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় ওই ছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন। মামলায় আরো পাঁচজনকে পৃথক অভিযোগে আসামি করা হয়। এতে উল্লেখিত অভিযোগ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগও আনা হয়।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ